নিম্ন আয়ের মানুষদের ঘরে খাদ্য নেই-

0
290

কঠোর ব্যবস্থা নিন চাল চোরদের বিরুদ্ধে:
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ঘরে থাকার নির্দেশনা মানতে গিয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের আয় কমে তাদের ১৪ শতাংশের ঘর খাবার শূন্য হয়ে পড়েছে বলে ব্র্যাকের এক জরিপে বলা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে গত ৩১ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশজুড়ে আড়াই হাজারের বেশি নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর এই জরিপ চালিয়েছে ব্র্যাক। জরিপের ভিত্তিতে তারা বলছে, এই পরিস্থিতিতে দেশে চরম দারিদ্র্যের হার আগের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের ১৪ শতাংশের ঘরে কোনো খাবারই নেই। তবে ২৯ শতাংশের ঘরে খাবার আছে। এতে দেখা গেছে, নিম্ন আয়ের ৯৩ শতাংশ মানুষের আয় কমেছে। চট্টগ্রামে ৮৪ শতাংশ, রংপুরে ৮১ শতাংশ এবং সিলেট বিভাগের ৮০ শতাংশ মানুষের আয় কমেছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, এখন কয়েকটি ‘ক্লাস্টার’ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল সবার ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে। প্রধানমন্ত্রী নিজে দেশের মানুষের অংশগ্রহণ চেয়েছিলেন। ঘরে থাকাটাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় অংশগ্রহণ। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে কর্মহীন, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের ঘরে রাখতে তাদের মাঝে খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ধারাবাহিক ত্রাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি এক ব্রিফিংয়ে তাৎক্ষণিক, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদিÑএই তিন পর্যায়ে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চারটি কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগণ, দিনমজুর এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণে বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, আমরা এক মহাদুর্যোগ অতিক্রম করছি। এসময় মানুষকে, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষদের ঘরে রাখতে হলে তাদেরকে পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা দিতে হবে। কিন্ত বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে, এই মানবিক বিপর্যয়েও সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরের চাল চুরির খবর এসেছে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে। এই সময়েও যাদের দ্বারা এ ধরনের অপকর্ম সংঘটিত হয় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে আমরা মনে করি। এছাড়া সরকারি সহায়তা সেসব মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে যেন ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচির কার্যক্রমে স্বচ্ছতা থাকে। কেননা প্রকৃত অসহায়দের কাছে খাদ্য সহায়তা না পৌঁছালে তাদের ঘরে রাখার চেষ্টা ব্যর্থ হবে এবং করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হবে না।