নারীর অগ্রগতিতে প্রধানমন্ত্রী

0
248

উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ নিরন্তর এগিয়ে যাচ্ছে। সমাজের অর্ধাংশ নারী যদি প্রগতির ধারায় নিজেদের যুক্ত করতে ব্যর্থ হতো তাহলে সামগ্রিক সমৃদ্ধি সামনে আসত না। ক্রমান্বয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া নারীরা আজ দেশের নিয়ামক শক্তিও। এক সময় যে শিক্ষকতা একমাত্র পেশা হিসেবে নারীর ক্ষেত্রে বিবেচিত হতো সেখানে প্রয়োজনীয় সমস্ত কর্মযোগে নারীর অংশীদারিত্ব আজ নজরকাড়া। প্রশাসনিক কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সফল বাণিজ্যে এগিয়ে যাওয়া নারীরা আজ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে আসীন হয়ে নিজের কর্মদক্ষতা ও পারদর্শিতা প্রমাণ করে যাচ্ছেন। মূলত প্রধানমন্ত্রীর সফল কর্মদ্যোতনা বিভিন্ন সূচকে নারীর সামনে চলার পথকে অবারিত ও মুক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর নারীদের বিভিন্ন রকম কর্মক্ষেত্রে যোগ দেয়ার সুযোগ তৈরি হয়। উচ্চশিক্ষায় মেয়েরা আগের মতো পিছিয়ে নেই। গত এক দশকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী থেকে সামরিক পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত হওয়া নারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নও এক বিশিষ্ট পর্যায়ে। বিচারপতি, সচিব, অতিরিক্ত সচিব, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদ অধিকার করা নারীরা আজ হাতে গোনার অবস্থায় নেই। বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি, প্রোভিসি, ডিন, বিভাগীয় প্রধান- সব জায়গায় অবাধ গতিবিধি সংশ্লিষ্টদের জীবন ধারাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। যা মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমল থেকেই শুরু হয়। নারীর ক্ষমতায়নের যথার্থ স্থপতি শেখ হাসিনা তার শাসনামলের সূচনালগ্ন থেকেই এই জনগোষ্ঠীর অর্ধাংশের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন। যার পথিকৃৎ স্বয়ং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সঙ্গত কারণে ’৭২-এর সংবিধানেই নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়নকে বিশেষভাবে আমলে নেয়া হয়েছিল। রাষ্ট্র ও জনজীবনের সব পর্যায়ে নারীর স্বাধীনতা, অধিকার ও ক্ষমতার ব্যাপারে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বঙ্গবন্ধু সংবিধানে যে নতুন ধারা প্রবর্তন করেন সেখান থেকেই তাঁর যথার্থ উত্তরসূরি কন্যা শেখ হাসিনা এর কোন ব্যত্যয় ঘটাননি। তবে পশ্চাৎপদ সমাজের নারীর চলার পথ কখনো মুক্ত ও অবারিত হয় না। তাকে কঠিন লড়াইয়ের মধ্যেই পথটা পাড়ি দিতে হয়। সেখানে যদি সরকার সহায়ক শক্তির ভূমিকায় সর্বক্ষণ পাশে থাকে তাহলে সেপথ মুক্ত হতেও সময় লাগে না। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সচেতনভাবে সেই ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা এখনও পালন করে যাচ্ছেন। যার অবধারিত প্রভাব বর্তমানে বাংলাদেশে নারীদের সুফল, সক্ষমতার সামনে এগিয়ে চলা। প্রধানমন্ত্রীর স্নেহছায়ায় অগ্রসর নারীরা আজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বেরও রোল মডেল। বিশেষ করে নারী স্বাস্থ্যের ব্যাপারে শেখ হাসিনার যুগান্তকারী অবদান আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায়ও পুরস্কৃত এবং প্রশংসিত। নারী শিক্ষাকে যুগের সঙ্গে এগিয়ে নেয়া, গর্ভকালীন মায়েদের স্বাস্থ্য পরিচর্যায় অনন্য ভূমিকায় দেশে আজ মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার অনেকটাই কমে এসেছে। তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমেও নারীর সাবলীল অংশীদারিত্ব বিজ্ঞানভিত্তিক এই খাতের অনবদ্য সংযোজন। যার জন্য ‘ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান উইমেন’ সংগঠনের পক্ষ থেকে গত বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রধানমন্ত্রীকে ‘লাইফ টাইম কন্ট্রিবিউশন ফর উইমেন এম্পাওয়ারমেন্ট’ পুরস্কারে ভূষিত করে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম তার প্রতিবেদনে সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে বাংলাদেশকে বিশ্বের ১৪৪টি দেশের মধ্যে ৪৮তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় একেবারে সেরা হিসেবে বিবেচনায় এনেছে। এটি বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে।