নানা ছুতোয় অতিমুনাফাখোরদের পণ্যের দাম বৃদ্ধি তোষণ নয় শাসন করতে হবে

0
263

অতিমুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা নানা সুযোগ ও ছুতোয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরূদ্ধে যথাসময়ে ব্যবস্থা নিলে এমন হতো না বলে আমরা মনে করি। অন্যায়কারীদের তোষণ নয়, শাসন করতে হবে। তোষণ করায় অতিমুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের সাহস বেড়ে গেছে। ফলে নানা ছুতা দিয়ে অতিমুনাফা করে বাজার অস্থির করছে। এতে ভোক্তারা অসহায় হয়ে পড়ছেন। বাজারে সৃষ্ট অস্থিরতা বন্ধে কঠোর পথে হাঁটতে হবে সরকারকে।
সম্প্রতি ‘পেঁয়াজ সরবরাহ কমে আসছে’ হঠাৎ এমন গুজব ছড়িয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি করে দাম বাড়ানো হয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। বাজারের প্রচলিত নিয়ম বা ব্যাকরণ মানছেন না পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা। গত তিন দিনে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গতকাল তা ১৮০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত বছর পেঁয়াজের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সরকারকে বেশ ভুগিয়েছে। পেঁয়াজের মৌসুম শুরু হলেও তার জের এখনো রয়ে গেছে বাজারে।
এছাড়া শীতের সবজি বাজারে এলেও দাম বেশি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সাধারণের হা-হুতাশের কমতি নেই। পকেটের সঙ্গে বাজারের সমন্বয় করা মুশকিল। সাধারণের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে যে ফারাক, তা জীবন দুর্বিষহ করে তোলার জন্য যথেষ্ট। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, গত সপ্তাহে কোম্পানিগুলো বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম এক লাফে লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়েছে। সঙ্গে প্যাকেটজাত চিনির দাম বাড়ানো হয় কেজিপ্রতি ৭ টাকা। বাজেটের পর এখন পর্যন্ত খোলা চিনির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১২ টাকার মতো। গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজ, আলু, চিনি, ভোজ্য তেল, ডিম, এলাচি ও ময়দার দাম কমবেশি বেড়েছে। কমার তালিকায় একটিও নেই। বাজারে ভোজ্য তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারকে দায়ী করতে চান। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, সয়াবিন, পাম তেল ও চিনির ক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধির কথা বলা হলেও একটি বিষয় দেখা যায়, তা হচ্ছে বাংলাদেশে বিশ্ববাজারের তুলনায় দাম সবসময়ই বেশি থাকে।
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, সঠিক তদারকি ও প্রশাসনিক শিথিলতার সুযোগ নিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বাজারের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করার অপপ্রয়াস চালিয়ে থাকে। কারসাজি বা সিন্ডিকেটের এমন তৎপরতায় যেমন ভোক্তাস্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়, তেমনি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও পড়ে এর বিরূপ প্রভাব। এছাড়া পেঁয়াজ, রসুন, চাল, ডাল, তেল, নুনের মতো নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাবও অনেক। এ অবস্থায় নিত্যপণ্যের দামে আগুন নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। রোজা আসছে। রোজার সময় কোনো কারণ ছাড়াই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা প্রতিবছরই লক্ষ করা যায়। কাজেই বাজার নিয়ন্ত্রণে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।