দেবহাটায় চাঞ্চল্যকর ফারিয়া হত্যা মামলার আসামী আলিম জেল-হাজতে :খুলতে শুরুর করেছে মামলার জট

0
675

 

আব্দুর রব লিটু, দেবহাটা: দেবহাটায় সিআইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া চাঞ্চল্যকর ফারিয়া হত্যা মামলার আসামী আলিমকে জেল-হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। মোবাইল ফোন পার্যালোচনায় খুলতে শুরুর করেছে মামলার জট। বেরিয়ে আসতে পারে হত্যার পরিকল্পনাকারী চক্রের গোপন রহস্য। ফেসে যাওয়ার সম্ভাবনা পূর্বের আসামী হওয়া ব্যক্তিদের প্রতিপক্ষ পুষ্পকাটি এলাকার দেবহাটা-সাতক্ষীরা সড়কে ২০১৩ সালের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কবর রচনাকারী মোকছেদ এবং তার ডান সিআইডি’র হাত গ্রেফতার হওয়া আলিম এবং মামলার এজাহারে বর্ণিত বাদী পক্ষের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সহ একটি সিন্ডিকেট চক্র। যেখানে জড়িয়ে পড়তে পারে বর্তমান ইউপি সদস্য এবং সদ্য বহিস্কৃত গ্রামপুলিশ সহ মোকছেদের একাধিক সহযোগীরা। জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার পুষ্পকাটি এলাকার জাফরের ঘেরের বাসা থেকে গাঁজা সেবনরত অবস্থায় গ্রেফতার হয় শিশু ফারিয়া হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী একই গ্রামের আফসার গাজী ওরফে ভন্টুর পুত্র আব্দুল আলিম। এসময় তার একান্ত সহযোগী মঞ্জুরের পুত্র গোলাম পালিয়ে যায়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আলিমকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে সিআইডি। খুলতে শুরু করেছে মামলার জট। মামলার আর্জির সাথে উল্লেখিত আলিমের প্রকৃত ফোন রেকর্ডের সাথে কোন মিল নেই বলে জানিয়েছে সিআ্ইডি কর্মকর্তা। মামলাটি নতুন মোড় নিয়ে বাদীদের আসামীর তীর এখন নিজেদের দিকে। নিজেদের দায়ের করা মামলায় ফাসতে শুরু করেছে নিজেরাই। উল্লেখ্য গত ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টম্বর কুলিয়া ইউনিয়নের পুষ্পকাটি গ্রামের একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় ফারিয়া সুলতানা তমা নামের চার বছরের এক কন্যা শিশুর লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এই মামলায় যাদেরকে আসামী করা হয়েছে তারাই কি প্রকৃত অপরাধী কি’না এব্যাপারে সন্দেহ হয় অনেকের। এ নিয়ে সে সময় থেকেই এলাকায় চলে আসছিল নানা আলোচনা সমালোচনা। বাদি পক্ষ আরজিতে যে তথ্য উপস্থাপন করেছিল তার সাথে ঘটনার কোন মিল ছিলনা বলে ধারানা করেছিল অনেকেই। সিআইডি থেকে পাওয়া তথ্য মতে এটাই এখন বাস্তবে রুপ নিতে চলেছে। সে সময় ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসার জন্য শিশুর পিতা ফরহাদ হোসেন, দাদা আবু সালেক ওরফে সালেক ও ফরহাদ হোসেনের মামা আকরাম সরদারের পুত্র রজব আলী ও আকবর এবং বন্ধু আফসারের পুত্র আব্দুল আলিমকে থানায় নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞসাবাদ শেষে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ঐদিন শিশুর মা সার্জিনা বেগম বাদি হয়ে মোকছেদের প্রতিপক্ষ ৬ জন ব্যক্তিকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিল। আসলে তমার বাবা ফরহাদের পরিবারের পূর্ব পরিচয় পর্যালোচনা করলে তাদের পরিবারে একাধিক খুন জখমের ঘটনা বেরিয়ে আসে। তাই সেখান থেকে মামলাটি নিয়ে ঐ এলাকার সাধারণ মানুষের ছিল ভিন্ন ভাবনা। নিহতের মায়ের দায়ের করা মামালাটি গত আগস্ট ২০১৮ সালে সি আই ডিতে হস্তান্তর করা হয়েছিল। সেসময় এলাকাবাসী ধারনা করেছিল মামলায় উল্লেখিত ফরহাদের মুখ বাধা গেঞ্জিটির ডিএনএ পরীক্ষা করলে হয়তো বেরিয়ে আসতে পারে প্রকৃত হত্যার রহস্য। তাছাড়া ঘটনার পর থেকে মোকছেদের পুত্র তুহিনের গা ঢাকা দেওয়াটা ছিল সন্দেহের বিষয়। তাছাড়া নিহত শিশু ফারিহার পিতা ফরহাদ হোসেন ওরফে ফরোর দীর্ঘদিন যাবৎ মোকছেদের বাড়িতে অবস্থানের বিষয়টিও ভাবিয়েছিল অনেককে। উল্লেখ্য যে, ঘটনার সময় একটি অস্ত্র মামলায় পুষ্পকাটি গ্রামের কেয়ামদ্দীন গাজীর পুত্র মোকছেদ আলী পুলিশের হাতে আটক হয়। আর এই মামলায় স্বাক্ষী করা হয় পুষ্পকাটি গ্রামের লিয়াকাত আলীর পুত্র রিপন ও শওকাত সরদারের পুত্র নাজমুল হুদাকে। ঘটনাটি নিয়ে মোকসেদ গ্রুপের সাথে রিপন ও নাজমুল হুদার বিরোধ চলে আসছিল দীর্ঘদিন। তারই সূত্র ধরে রিপন ও নাজমুল হুদাকে ফাঁসাতে প্রতিবেশী ফরহাদের ৪বছরের শিশু কন্যা ফারিয়া সুলতানা তমাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করছে প্রতিবেশীরা। অপরদিকে এলাকাবাসীর এখনও ধারণা, নিহত শিশুর পিতা ফরহাদ হোসেন, সদ্য গ্রেফতার হওয়া মামলার আর্জি অনুযায়ী কথিত উদ্ধারকারী আব্দুল আলিম কে সঠিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে। মামলায় ফেসে যেতে পারে নাশকতা, চাঁদাবাজি সহ একাধিক মালার আসামী মোকছেদ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। সাতক্ষীরা সিআইডি অফিসের তদন্ত অফিসার জাকির হোসেন জানান, মোবাইল ফোন পর্যালোচনায় তার অবস্থান এবং এজাহারের উল্ল্যেখিত সময়ের সাথে কোন মিল নেই। আটককৃত আলিমকে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্তে সে যে জড়িত এটা একেবারেই স্পষ্ট।