দাকোপে কৃষিকাজে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহারে খাদ্যচাহিদা পূরণ সম্ভব

0
524

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনাটাইমস :
জৈব কৃষিপদ্ধতি ঠিকমতো প্রয়োগ করলে মানুষের খাবারের চাহিদা পূরণ করার সুযোগ রয়েছে। কারণ, এ পদ্ধতিতে যে পরিমাণ ফসল উৎপাদন হয়, তা আগের তুলনায় অধিক লাভ হয়। ফলে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে এই জৈব প্রযুক্তির চাষাবাদ। বিষমুক্ত সবজি ও ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষিকাজে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহারের আহবান জানানো হয়। ওই জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করলে একদিকে যেমন ফসলটি বিষমুক্ত থাকবে, অন্যদিকে মানুষের খাবারও থাকবে নিরাপদ।

খুলনার দাকোপ উপজেলায় বুধবার (৬ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে ‘নিরাপদ সবজি উৎপাদনের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বিভিন্ন পর্যায়ের সেবারমান উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ’ কর্মশালায়-এ আহবান জানান কৃষি কর্মকর্তারা।

বক্তারা বলেন, প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে জৈব চাষাবাদ পদ্ধতিতে কৃষি উৎপাদন সবমিলে কিছুটা কম হয়। এ ব্যবধান সমপরিমাণে নামিয়ে আনা সম্ভব, যদি কীটনাশকমুক্ত ফসল আরও বেশি উৎপাদন করা হয়। আবার শিমজাতীয় কয়েকটি ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে, যেমন: শিম, মটরশুঁটি ও মসুর ডাল, জৈব ও রাসায়নিক চাষাবাদ পদ্ধতির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তেমন কোনো ব্যবধান নেই।

রাসায়নিক পদ্ধতিতে প্রচুর চাষাবাদের কারণে পরিবেশের অনেক ক্ষতি হচ্ছে বলে উদ্বেগক্রমে বাড়ছে। বিপুল পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহারের কারণে মৌমাছি ও অন্যান্য উপকারী কীটপতঙ্গ মারা যাচ্ছে। ফসলের পরাগায়ণে এসব কীটপতঙ্গ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবার রাসায়নিক সারের ব্যবহার বাড়লেও তাতে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির হার দিন দিন কমে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষক প্রশিক্ষণকক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দাকোপ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান খান। এ সময় কৃষি কর্মকর্তা বলেন, জনবল-সংকট থাকায় চাষিদের যথেষ্ঠ সেবা দেয়ার জন্য হাটে হাটে ভ্রাম্যমাণ কৃষি সেবার কার্যক্রম চালু করেছি। এছাড়া জৈব প্রযুক্তি একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। যা বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তি। অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহারের ফলে কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে কৃষক সহজেই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁর জমিতে নিরাপদ সবজি উৎপাদ করতে পারে সেজন্য সহযোগিতা করা হচ্ছে।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুনসুর আলী খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদ, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান গৌরপদ বাছাড়, খাদিজা আকতার। প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোছাদ্দেক হোসেন, বটিয়াঘাটা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. ইনসাদ ইবনে আমিন। এতে প্রায় শতাধিক কৃষক অংশ নেন। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান ও রিনা আকতার।