দাকোপে আ.লীগের মনোনয়ন পেলেন যুদ্ধাপরাধীর সন্তান!

0
1205

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনাটাইমস :
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে খুলনার দাকোপ উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন শেখ আবুল হোসেন। তবে তিনি যুদ্ধাপরাধীর সন্তান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শেখ আবুল হোসেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমাও দেন।

দলীয় সূত্র মতে, শুক্রবার (১ মার্চ) চতুর্থ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের চুড়ান্ত নামের তালিকা প্রকাশ করেছেন দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। সেখানে দলটি তাঁর নাম প্রকাশ করেছেন। এতে আওয়ামী লীগের একটি অংশ ক্ষুব্ধ প্রকাশ করছেন। প্রতিকার চেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয়রা।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, স্বাধীনতা যুদ্ধচলাকালিনে শেখ আবুল হোসেনের পিতা মৃত আরশাদ আলী বীর মুক্তিযোদ্ধা কাওসার আলী ও আজহার আলীকে পাকসেনা দ্বারা খুলনার গল্লামারী বধ্যভূমিতে হত্যা করেন। ওই অপরাধে ১৯৭২ সালে যুদ্ধাপরাধী ও দালালি আইনে মামলা দায়ের হলে আদালতের মাধ্যমে তাঁর পিতা সাজাপ্রাপ্ত আসমী হয়ে কারাগারে বন্ধী হন। যাহার মামলা নম্বর এসটিসি ২০৫/৭২-এর ৩৬৪ বিপিসি ধারায় আর্টিকেল ১ (এ) এফপিও ৮/৭২ রুজু হলে চারবছরের সাজা হয় তাঁর (আবুল) পিতার। ওই সময় কারাগারে আরশাদ আলীর মৃত্যু হলে মৃতদেহ কেও গ্রহন না করায় আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম তাঁর পিতার দাফন ক্রিয়া সম্পন্ন করেন।

অভিযোগ রয়েছে ১৯৯০ সালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন তার নিজের গ্রামের ফকির সাহেবের বাড়িতে ডাকাত করার অপরাধে একটি ডাকাতি মামলার আসামী হন। এছাড়া আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারি ও ব্যক্তিগত জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। উপজেলাতে লবণ পানি উত্তোলনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তিনি লবণ পানি উত্তোলন করে চিংড়ি চাষের হ্যাচারি তৈরি করে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছেন। হ্যাচারির বিষ্টা পানি খোনা গ্রামের খালে ফেলার কারণে এলাকার গবাদি পশু থেকে শুরু করে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ অভিযোগ করে বলেন যুদ্ধাপরাধীর সন্তান শেখ আবুল হোসেন দলে এসে অনেক ত্যাগী নেতাদের দূরে সরিয়ে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় বিএনপি নেতাকর্মীদের দলে টেনে নিয়ে দুর্ণীতি করে চলেছেন।

দাকোপ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন টেলিফোনে খুলনাটাইমসকে বলেন একটি মহল তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। শুধুমাত্র সমাজে সম্মানহানি করার জন্য একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ করে চলছে মহলটি। তিনি বলেন দীর্ঘদিন ধরে দলের ত্যাগী নেতা ও পরীক্ষিতকর্মী এবং দক্ষ সংগঠক বলে তাঁর পরিচয় রয়েছে জেলা আ’লীগের রাজনীতিতে। যার ফলে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সমর্থনে দলীয় একক প্রার্থী নির্বাচিত হন বলে দাবী করেন।

তিনি আরও বলেন গেল নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন করে জয়ী হন। তখনও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এমন সব মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। এবারও মহলটি বিভ্রান্তিকর তথ্য গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সরবরাহ করছে। আবুল হোসেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় তাঁর পরিবারের কোন সদস্যের নাম দেখাতে পারলে স্বেচ্ছায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছেড়ে অবসরে যাবেন।