নিজস্ব প্রতিনিধি:
খুলনার দাকোপ উপজেলার বাজুয়া ইউনিয়নে অন্যের জায়গা জবর দখল করে আ’লীগের ইউনিয়ন অফিস নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
সূত্রে জানা যায়, ১৯৮২ সালে বাজুয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রয়াত ধীরেন্দ্রনাথ গাইন বাজুয়ার চুনকুড়ি বাঁধ দূর্গা মন্দিরের পূর্ব পাশের রাস্তা সংলগ্ন জায়গাটি পজেশন নিয়ে মাছ ব্যবসার ঘর নির্মাণ করেন। সেখান থেকেই ঘরটি মাছ ব্যবসার কাজে ব্যবহার হত। ১৯৮৮ সালে ঘূর্ণিঝড়ে ঘরটি ভেঙ্গে গেলে ধীরেন্দ্রনাথ গাইনের পুত্র বাজুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ গাইন এবং তাঁর ছোট ভাই শ্যামাপ্রসাদ গাইন বাঁশ-খুটি দিয়ে ঘরটি পুনরায় নির্মাণ করেন। ২০০৭ সালে প্রবল ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে ঘরটি আবার ভেঙ্গে গেলে দেবপ্রসাদ গাইন ঘরটি পূনরায় নির্মানের জন্য ২০১৫ সালে সেখানে একটি পাকা ভিত্তি স্থাপন করেন গৃহ নির্মানের জন্য। ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দেবপ্রসাদ গাইন হেরে যান এবং আ’লীগের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি রঘুনাথ রায় নির্বাচনে জয়ি হন। নির্বাচনে জয়ি হওয়ার পর বর্তমান চেয়ারম্যান সেখানে আরও পজেশনের জায়গা থাকা সত্তে¡ও দলবল নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যানের পাকা ভিত্তি করা পজেশনটি ভেঙ্গে দখলে নেন। বর্তমানে সেখানে আ’লীগের বাজুয়া অফিস নির্মাণ করা হয়েছে।
স্থানীয় বিশ্বজিৎ দাশ, জসবন্ধু দাশ ও শশিভূষন গাইন বলেন, জায়গাটি ধীরেন্দ্রনাথ গাইন পজেশন নেওয়ার পর থেকে তাঁর পুত্রদের দখলে ছিল । বর্তমান চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে জায়গাটি জোর করে দখলে নিয়েছেন।
ই্উপি চেয়ারম্যান প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন দলের একজন। তাই ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজুয়া চুনকুড়ি বাঁধের একাধিক ব্যক্তি বলেন, চেয়ারম্যান রঘুনাথ রায় ইতিপূর্বে বাজুয়া বাঁধে ১টি এবং চুনকুড়ি বাঁধে ১টি জবর-দখলকৃত পজেশন অন্যদের কাছে বিক্রয় করেছেন। বর্তমানে বাজুয়া ঋষি পাড়ার পাশে চেয়ারম্যানের আরও একটি পজেশনে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। অনেকের মতে মানিক আরিন্দা পজেশনটির প্রকৃত মালিক। তারা আরও জানান, উপজেলার পোদ্দারগঞ্জ খেয়াঘাটে ২টি এবং সদর চালনা পৌরসভাতে রাস্তার পার্শ্বে ১টি জায়গায় ইউপি চেয়ারম্যান রঘুনাথ রায়ের পজেশনের জায়গা রয়েছে।
বাজুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ গাইন অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবার আমল থেকে পজেশনের জায়গাটি আমাদের ছিল। বর্তমান চেয়ারম্যান জায়গাটি জোর করে দখল নিয়ে আ’লীগের নিজস্ব দলীয় কার্য্যালয় নির্মাণ করেছেন। তিনি আরও জানান, চেয়ারম্যান রঘুনাথ রায়ের নিজের দখলে একাধিক পজেশনের জায়গা রয়েছে। অথচ সেখানে তিনি দলীয় কার্য্যালয় না নির্মাণ করে আমাদের জায়গায় করেছেন।
বিষয়টি জানার জন্য মুঠোফোনে ইউপি চেয়ারম্যান রঘুনাথ রায়ের সাথে কথা হলে। তিনি বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। খাস জায়গায় ঘর থাকায় গত বছর ইউএনও সাহেব ঘরটি ভেঙ্গে দেয়। দলীয় কার্যালয় নির্মাণের বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান, ইউএনও সাহেব যানে। আমি কিছু জানি না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মারুফুল আলম খুলনা টাইসমকে বলেন, ওখানে নির্মাধীন ঘরটি আমি গত বছর ভেঙ্গে দিয়েছিলাম। উক্ত স্থানে যদি দলীয় কার্যালয় নির্মাণ করে থাকে, তবে সেটিও ভেঙ্গে দেওয়া হবে।