দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশ ও পয়েন্ট টেবিলে চোখ ভারতের

0
385

খুলনাটাইমস ডেস্ক : প্রথম দুই ম্যাচ জিতে ইতোমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে স্বাগতিক ভারত। তাই এখন ভারতের সামনে দু’টি নতুন লক্ষ্য। একটি হলো- তৃতীয় ও শেষ টেস্ট জিতে প্রোটিয়াদের হোয়াইটওয়াশ করা, অন্যটি হলো- বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে পয়েন্ট টেবিলে নিজের শীর্ষস্থানকে আরও দৃঢ় করা। ৪ ম্যাচে ২০০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকাকে শেষ ম্যাচে হারিয়ে পয়েন্ট আরও বাড়িয়ে নিতে মরিয়া বিরাট কোহলির দল। সিরিজ হার নিশ্চিত হওয়ায়, হোয়াইটওয়াশের মুখে দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে মাঠের লড়াইয়ে জ্বলে উঠতে চায় প্রোটিয়ারা। আগামীকাল রাঁচিতে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট।বিশাখাপতœমে সিরিজের প্রথম টেস্ট ২০৩ রানে এবং পুনেতে দ্বিতীয় ম্যাচ ইনিংস ও ১৩৭ রানে জিতে নেয় ভারত। তাই এক ম্যাচ বাকী রেখেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলে টিম ইন্ডিয়া। যার মাধ্যমে দেশের মাটিতে টানা ১১ টেস্ট সিরিজ জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়ে ভারত। ফলে ভেঙ্গে যায় অস্ট্রেলিয়ার করা ১০ টেস্ট সিরিজ জয়ের বিশ্বরেকর্ডটি।প্রথম দুই টেস্টে ব্যাট-বল হাতে দুর্দান্ত পারফরমেন্স ছিলো ভারতের। প্রথম টেস্টে ওপেনার হিসেবে নেমে চমক দেখান রোহিত শর্মা। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত ওপেনার হিসেবে নেমেই দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেন তিনি। তার সাথে আরেক ওপেনার মায়াঙ্কা আগারওয়ালের ডাবল-সেঞ্চুরি ভারতকে ম্যাচ জয়ের ভীত গড়ে দেয়। ব্যাটসম্যানদের নৈপুন্যের পর তিন বোলার মোহাম্মদ সামি-রবীচন্দ্রন অশ্বিন-রবীন্দ্র জাদেজার পারফরমেন্স ছিলো চোখে পড়ার মত। দুই ইনিংসে সামি ৫, অশ্বিন ৮ ও ৬ উইকেট শিকার করেন।দ্বিতীয় টেস্টে পারফরমেন্সের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখে ভারত। এবার ডাবল-সেঞ্চুরি হাঁকান ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ২৫৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন তিনি। প্রথম টেস্টের মত এ ম্যাচেও সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ওপেনার আগারওয়াল। ছয় নম্বরে নেমে ৯১ রানের ইনিংস খেলেন জাদেজা। তাই প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ৬০১ রানের পাহাড় গড়ে ভারত।এরপর ভারতীয় বোলারদের তোপে দুই ইনিংসে ২৭৫ ও ১৮৯ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচ হারে দক্ষিণ আফ্রিকা। পেসার উমেশ যাদব-অশ্বিন ৬টি করে, জাদেজা ৫টি উইকেট নেন। তাই সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি ভারতকে।প্রথম দুই ম্যাচের মত পারফরমেন্সের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে মরিয়া ভারত। দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি বলেন, ‘টানা ১১টি সিরিজ জয়, যেকোন দলের জন্যই অসাধারন ব্যাপার। তবে আমরা এমন রেকর্ড নিয়ে ভাবছিনা। আমরা প্রত্যকটি ম্যাচ নিয়েই ভাবছি। কারন এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপ ফরম্যাটে টেস্ট ম্যাচ হচ্ছে। এই অবস্থায় সব ম্যাচই মহাগুরুত্বপূর্ণ। তাই জয়ের মধ্যেই থাকতে চাই আমরা। আশা করছি, সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে শেষ করতে সক্ষম হবো আমরা।’হোয়াইটওয়াশ এড়ানো ম্যাচের আগে দুঃসংবাদ শুনতে হয় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। দ্বিতীয় টেস্টেই ডান-হাতে কব্জিতে ব্যাথা পান ওপেনার আইডেন মার্করাম। ফলে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট থেকে ছিটকে পড়েছেন তিনি। অবশ্য ফর্মে নেই মার্করাম। প্রথম টেস্টে ৩৯ ও ৫ রান করেন তিনি। দ্বিতীয় ম্যাচের দুই ইনিংসে রানের খাতাই খুলতে পারেননি মার্করাম।শুধুমাত্র মার্করামই নন, ভারতীয় বোলারদের সামনে নিজেদের পুরোপুরিভাবে মেলে ধরতে পারছে না দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন ওপেনার ডিন এলগার ও উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি কক। এরপর থেকে রান খড়ায় ভুগছেন তারা। পাশাপাশি দলের স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরাও। তবে লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যাট কথা বলছে। ভারনন ফিলান্ডার ও কেশব মহারাজ দ্বিতীয় টেস্টে যথাক্রমে ৮১ ও ৯৪ রান করেন। যা স্বীকৃত অনেক ব্যাটসম্যানের চেয়ে বেশি রান।তাই শেষ টেস্টে ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে বড় স্কোর চান দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফাফ ডু-প্লেসিস। তিনি বলেন, ‘সেরা সাফল্য পেতে হলে মাঠে ভালো পারফরমেন্স করতে হবে। যদি পারফরমেন্স না করা যায়, তবে চেষ্টা করে যেতে হবে এবং সেরা পারফরমেন্সের জন্য নিজেকে উজার করে দিতে হবে। ব্যাটসম্যানরা বড় স্কোর করতে পারছে না। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে দু’টি সেঞ্চুরি হলেও পরের তিন ইনিংসে ব্যাটসম্যানরা পুরোপুরিভাবেই ব্যর্থ। আশা করছি, ব্যাটসম্যান-বোলাররা ঘুড়ে দাঁড়াবে এবং হোয়াইটওয়াশ রুখতে সক্ষম হবে। ম্যাচ হারলে সময়টা অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায়। তবে ভালো পারফরমেন্স করার বিষয়ে ছেলেরা আত্মবিশ্বাসী।’ভারত দল : বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), মায়াঙ্ক আগারওয়াল, রোহিত শর্মা, সুবমান গিল, চেতেশ্বর পূজারা, আজিঙ্কা রাহানে, হনুমা বিহারি, ঋষভ পান্থ, ঋদ্ধিমান সাহা, রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, কুলদীপ যাদব, ইশান্ত শর্মা, জসপ্রিত বুমরাহ ও মোহাম্মদ শামি।দক্ষিণ আফ্রিকা দল : ফাফ ডু-প্লেসিস (অধিনায়ক), টেম্বা বাভুমা, তিউনিস ডি ব্রুইন, কুইন্টন ডি কক, ডিন এলগার, জুবায়ের হামজা, কেশব মহারাজ, সেনুরান মুতুসামি, লুঙ্গি এনগিডি, এনরিখ নর্টি, ভারনন ফিলান্ডার, ড্যান পিট, কাগিসো রাবাদা এবং রুডি সেকেন্ড। সূত্র: বাসস