দক্ষিণাঞ্চলে ভারতীয় চাল আমদানির পরিমাণ কমেছে ৮২ শতাংশ

0
472

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বোরা ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে। কৃষকের গোলায় ধান ভর্তি। খাদ্য ঘাটতি নেই। চালের মূল্য স্থিতিশীল। পাইকারী ও খুচরা বাজারের হরেক রকম চালের মজুদ। ভারতীয় চালের চাহিদা নেই। দক্ষিণাঞ্চলে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে ৮২ শতাংশ চাল আমদানি কম হয়েছে। কোটি কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হয়। খুলনা নগরীতে চালের মূল্য কেজি প্রতি সর্বনি¤œ ৩০টাকা থেকে ৪৮ টাকা। উপজেলা পর্যায়ে ২৭ টাকা দরেও মোটা চাল পাওয়া যাচ্ছে।
খাদ্য বিভাগের সূত্র জানায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দর্শনা, ভোমরা শুল্ক ষ্টেশন ও বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে ১৬ লাখ ৩৬ হাজার ৭৫৭ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে উল্লিখিত তিন বন্দর দিয়ে ৬৮ হাজার ৬৫৪ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়। নওয়াপাড়া মোকামে একসময় ভারতীয় চালের মজুদ থাকত। এখন সেখানে ভারতীয় চাল নেই। বেসরকারি ভাবে জুলাই মাসে চাল আমদানি হচ্ছে না, বল্লেই চলে। সূত্র মতে দক্ষিণাঞ্চলের দশ জেলায় ৭২টি গুদাম ও একটি সাইলোতে ১ লাখ ৭৫ হাজার ২৫৪ মেট্রিক টন চাল মজুদ আছে। গমের মজুদ ৫৪ হাজার মেট্রিক টন।
খুলনা জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ তানভীর রহমান জানান, এ মাসের প্রথম দিকে রাশিয়া থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে জাহাজ মোংলা বন্দরে ভেড়ে। বিদেশ থেকে চাল আমদানির প্রয়োজন হচ্ছে না। কৃষকের গোলায় ধানের মজুদ বেশি। বোরো সংগ্রহ অভিযান সফল করতে ধান সংগ্রহের জন্য কৃষকের বাড়ি বাড়ি যেতে হচ্ছে। অন্য সূত্র জানান, এবার খুলনা জেলার নয় উপজেলায় ৫৯ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৬৩ হাজার ৯৬৭ মেট্রিক টন বোরো উৎপাদন হয়।
বাগেরহাট , সাতক্ষীরা, নড়াইল জেলায় এবার ৮ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়।
ভোমরা শুল্ক ষ্টেশনের প্রতিনিধি মো: আবু ইউসুফ জানান, ২০১৭ সালে প্রতিদিন ভারত থেকে গড়ে ২ হাজার মেট্রিক টন চাল আসত। এবছরের জুন জুলাই মাসে এখনও চাল আসেনি। আমদানি শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় আমদানিকারকরা লোকসন এড়াতে চাল আমদানি বন্ধ করেছে।
খুলনা জেলা বাজার কর্মকর্তার রেকড অনুযায়ী মোটা চাল কেজি প্রতি ৩০-৩২ টাকা, মাঝারি ৩৮-৪০ টাকা ও চিকন চাল ৪৬-৪৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ মাসের গত দুই সপ্তাহ খুলনা চালের বাজারের মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের সব থেকে বড় মোকাম পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনির চাল ব্যবসায়ী বিধান চন্দ্র সরকার জানান, রোববার প্রতি কেজি মোটা চাল ২৭ টাকা, চিকন চাল ৩২টাকা, মাঝারি ২৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা সদরের চাল ব্যবসায়ী মুজাহিদ বিশ্বাস জানান, এখানে মোটা (পুরান) ৩৫ টাকা, নতুন ৩০ টাকা, চিকন নতুন চাল ৩২ টাকা, পুরান চাল ৩৫ টাকা, মাঝারি নতুন ৩০ টাকা ও পুরান ৩৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
খাদ্য বিভাগের সূত্র জানান, জেলায় খাদ্য ঘাটতি নেই। বোরো মৌসুমের শুরুতেই ধানের দাম কম থাকায়, দক্ষিণাঞ্চলের কৃষক ধান বিক্রি না করে গোলাজাত করে।