তালায় ঘুর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে স্বপ্ন গুলো চলে গেছে দুঃস্বপ্নের দখলে

0
497

মোঃ রোকনুজ্জামান টিপু,তালা সাতক্ষীরা ঃ

প্রাণঘাতি করোনা সারাবিশের¦ ন্যায় বাংলাদেশেও দেখা দিয়েছে। জীবন-জীবিকা হয়ে পড়েছে স্থবির। কাজ নেই ব্যবসা-বাণিজ্য লাটে উঠেছে সেই কবে! কারো সামান্য সঞ্চয়, কেউ বা ধার-দেনা, আবার কেউ ত্রাণ নিয়ে কোনমতে দিন কাটাচ্ছিলো। বোরো ধানে কিছুটা স্বস্থি ফিরলেও সব ধান ঘরে ওঠেনি এখনও।আমের বাম্পার ফলনে আম চাষীর মুখে প্রশান্তির হাসি দেখা দিলেও সব ফিকে হয়ে গেল এক রাতে ঘুণিঝড় আম্পানের তান্ডবে।

প্রায় চার-পাঁচ ঘন্টার ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের প্রলয়ঙ্করী তান্ডবে সব লন্ড-ভন্ড হয়ে গেল। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের আশা-ভরসা-স্বপ্ন সব শেষ হয়ে গেল আম্ফানের তান্ডবে। গতকাল সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় ঝড়। রাত ৯টার পর প্রচন্ড গতিতে আঘাত হানে আম্ফান। তান্ডব চলে রাত দেড়টা পর্যন্ত। ঘূর্ণি ঝড়ের কারনে মানুষের ভেতর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঝড়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি, উড়ে গেছে পাকা ঘরের টিনের ছাউনি।

বুধবার বিকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত প্রচন্ড গতিতে ঝড়ো হাওয়ায় সাথে বয়ে যায় মুসলধারে বৃষ্টি । এতে অসংখ্য গাছপালা ভেঙে গেছে। পান বরজ, ভূট্টার ক্ষেত, আম বাগানসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানের বরজগুলো লুটিয়ে পড়েছে মাটিতে। কৃষকের স্বপ্নও লুটিয়ে পড়েছে সেথায়। আম তো দূরের কথা, গাছগুলোও রক্ষা পায়নি এবার। আমগাছের সাথে ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে চাষীর মেরুদন্ড। রিক্ত, নিঃস্ব, বিধ্বস্তÍ এক জনপদে পরিণত হয়েছে তালা উপজেলা।

ঝড়ের কারণে তালায় উপজেলায় বুধবার সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় বিদ্যুত চালু হয়েছে তবে এ রিপোর্ট লেখার সময় আবার বিদ্যুত চলে যায়।সাড়ে ৭টা সময় আবার বিদ্যুত আসে। অনেকের মোবাইলসহ বন্ধ হয়ে গেছে ইন্টারনেট সংযোগ।

তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হোসেন এ প্রতিনিধিকে বলেন,ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে উপজেলা লন্ড ভন্ড হয়ে গেছে।তবে আগে থেকেই আমরা মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ায় কারণে কোন প্রাণহাণির ঘটনা ঘটেনি বলে মহান আল্লাহর নিকট শুকুরিয়া আদায় করছি । কিন্তু আম্ফানের তান্ডবে উপজেলায় প্রায় ৩০০ কাঁচা ঘর সম্পুর্ন ভেঙ্গে গেছে।এছাড়া প্রায় ১১০০ সেমি পাকা ঘরে ছাউনি উড়ে গেছে। তাছাড়া উপজেলা প্রায় ৭৫%আম চাষীর আম নষ্ট হয়েগেছে। অসংখ্য গাছপালা ভেঙে গেছে। পান বরজ, ভূট্টার ক্ষেত,ধানসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য দু’দিন পরই ঈদ।এদিকে করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব আর অন্যদিকে আম্ফানের তান্ডবের সামনে সীমাহীন অনিশ্চয়তা,ঘোর অমানিশা,মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন-মধ্যবিত্তই দরিদ্র কিংবা হতদরিদ্রের কাতারে শামিল হবে আনেকেই।কারণ ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে ঈদের স্বপ্ন গুলো চলে গেছে দুঃস্বপ্নদের দখলে ।