ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমলেও আতংঙ্ক কমেনি খুলনা বিভাগের এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১০ হাজার ৮৮৫, মৃত্যু ৩৮ জন

0
357

আছাদ জাহিম সোয়াব
দিনকে দিন ডেঙ্গু রোগী আক্রান্ত সংখ্যা কমে আসলেও এ রোগের মানুষের মধ্যে এখনো আতংকে রয়েই গেছে। প্রতিদিন কোন না কোন জায়গায় ডেঙ্গুতে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। খুলনা বিভাগের এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত সংখ্যা দাড়িয়েছে ১০ হাজার ৮৮৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে শীর্ষ রয়েছে যশোর জেলা। এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৩৮ জন। যার মধ্যে খুলনায় ১ হাজার ৯৭৪ ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৫ জন। তবে এ সব আক্রান্তরা খুলনার বাসিন্দাবাদে বিভিন্ন উপজেলায় মানুষ রয়েছে। বর্তমানে খুলনা বিভাগের ডেঙ্গুতে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১০ হাজার ৮৮৫ জন। বর্তমানে ১৪২ জন বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ( রোগ নিয়ন্ত্রণ) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ( রোগ নিয়ন্ত্রণ) সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় খুলনা বিভাগে নতুন করে ৫৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত খুলনা বিভাগের মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মিলে ১০ হাজার ৮৮৫ জন। এর মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্তে শীর্ষে রয়েছে যশোর জেলায়। আক্রান্ত ৩ হাজার ৮৬৭ জন। এছাড়া খুলনায় ২৫৭ জন, বাগেরহাটে ৩৩২ জন, সাতক্ষীরায় ৯৩৮ জন, ঝিনাইদহে ৬৯৯ জন, মাগুরায় ৫৫৪ জন, নড়াইলে ৫৬৬ জন, কুস্টিয়ায় ১ হাজার ৫৫৩ জন, চুয়াডাঙ্গায় ১৪৮ জন, মেহেরপুরে ২৫৩ জন এবং খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ১ হাজার ৭১৭ জন। এ পর্যন্ত খুলনা বিভাগের ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছে ৩৮ জন। যার মধ্যে খুলনায় রয়েছে ২৫ জন। এছাড়া যশোরে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৬ জন, কুষ্টিয়ায় ৩ জন, মাগুরায় ১ জন, ঝিনাইদহে ১ জন ও মেহেরপুরে একজন রয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এক ব্যক্তি খুমেক হাসপাতালে আনার পথে মারা যায়।
খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ( রোগ নিয়ন্ত্রণ) সহকারি পরিচালক ডাঃ ফেরদৌসী আক্রার এ প্রতিবেদককে বলেন, খুলনা বিভাগের দিনকে দিন ডেঙ্গু আক্রান্ত সংখ্যা কমে আসছে। আক্রান্তদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যশোর। ডেঙ্গু আক্রান্ত সংখ্যা কমে গেলেও আক্রান্ত খবর পাওয়া যাচ্ছে। খুলনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই যশোর জেলার বাসিন্দা। বাকীরা অন্যান্য জেলার মানুষ রয়েছে।
খুলনা সিভিল সার্জন অফিস সূত্র মতে, এ পর্যন্ত খুলনায় ১ হাজার ৯৭৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই জন শিশুসহ ২৫ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
সূত্র মতে, এ পর্যন্ত খুমেক হাসপাতালে মোট ১ হাজার ৭১৭ জন ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে শিশু রোগী ছিলো ২০৪ জন। এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই জন শিশুসহ ২৫ জন মারা যায়। এছাড়া খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ৪০ জন, সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫৬ জন, গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৬ জন, আদ্ব-দ্বীন হাসপাতালে ৩৭ জন, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ১৮ জন, রূপসা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ জন, তেরখাদায় ২৩ জন, ফুলতলায় ৯ জন, ডুমুরিয়ায় ২ জন এবং পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২ জন ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। খুলনায় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ জন ডেঙ্গু রোগী মারা যান। এর মধ্যে সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ জন এবং গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ জন ডেঙ্গু রোগী মারা যায়।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গু মশা চার ধরনের স্ট্রেইন বহন করে এবং বারবার বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেইন হুল ফুটানোর মাধ্যমে মানুষের শরীরে আসতে পারে, তাই এ জ্বরের সঠিক চিকিৎসা অনেক সময় হয় না। আক্রান্ত ব্যক্তি হয়তো শরীরে এক ধরনের স্ট্রেইনের বিপরীতে প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করছে; কিন্তু দ্বিতীয়বার অন্য স্ট্রেইন দ্বারা আক্রান্ত হলে শরীর সেই স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যায়। ডেঙ্গু মশার এই নানা রূপের কারণে এবার মানুষের বেশি সমস্যা হচ্ছে। জ্বর হলেই তা অবহেলা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রঘূ করা উচিত।