ডিআইজি প্রিজন্স পার্থের মামলার অবস্থা জানতে চান হাইকোর্ট

0
278

খুলনাটাইমস: সাময়িক বরখাস্ত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিআইজি (প্রিজন্স) পার্থ গোপাল বণিকের ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের মামলায় তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা দুদককে জানাতে বলেছে হাইকোর্ট। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে আগামী ৩০ জানুয়ারি তা জানাতে বলা হয়েছে। আর পার্থ গোপাল বণিকের জামিন আবেদনটি আগামী ২ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য রেখেছে আদালত। গতকাল বুধবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শফিক আহমেদ ও কামরুল ইসলাম। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। খুরশীদ আলম খান পরে বলেন, পার্থ গোপাল বণিকের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়েছে। আদালত এই মামলার তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। ৩০ জানুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তাকে জানাতে বলেছেন আদালত। সর্বশেষ অবস্থা জানার পর জামিন আবেদনের আবার শুনানি হবে। সে জন্য ২ ফেব্রুয়ারি তারিখ রেখেছেন আদালত। ফ্ল্যাট থেকে ‘ঘুষ-দুর্নীতির’ ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের মামলায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিআইজি (প্রিজন্স) পার্থ গোপাল বণিকের জামিন আবেদন নাকচ করে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ। এ আদেশের বিরুদ্ধে পরে হাইকোর্ট আবেদন করেন পার্থ গোপাল বণিক; যেটি গতকাল বুধবার শুনানির জন্য ওঠে। গত ২৯ জুলাই ধানম-ির নর্থ রোডের (ভূতের গলি) ২৭-২৮/১ নম্বর বাসার বি/৬ নম্বর ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার এবং পার্থকে গ্রেফতার করে দুদক। পরদিন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ‘অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থের অবস্থান গোপন ও পাচারের উদ্দেশ্যে’ বাসায় লুকিয়ে রেখে দ-বিধির ১৬১ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা ও মানিলন্ডারিং আইনের ৪(২) ধারায় অপরাধ করার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। দুদকের কর্মকর্তারা জানান, উদ্ধার হওয়া টাকার মধ্যে পার্থের ফ্ল্যাটের দেয়াল কেবিনেটে গেঞ্জিতে মোড়ানো ছিল ৫০ লাখ টাকা। একটি স্কুল ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয় বাকি ৩০ লাখ টাকা। আটকের সময় ডিআইজি পার্থ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন, এই ৮০ লাখ টাকা তার বৈধ আয় থেকে অর্জিত। এর মধ্যে ৩০ লাখ টাকা তার শাশুড়ি দিয়েছেন, আর ৫০ লাখ টাকা তার সারা জীবনের জমানো টাকা। ফ্ল্যাটের নিচে থাকা তার ব্যবহারের গাড়িটির মালিকও তিনি নন, তার বন্ধুর গাড়ি ব্যবহার করেন। যে ফ্ল্যাটে থাকেন তাও তার শাশুড়ির বলে দাবি করেছিলেন তিনি। অন্যদিকে ওই দিন অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া দুদক পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুফ বলেছিলেন, পার্থের ঘোষিত আয়কর ফাইলে এসব টাকার ঘোষণা নেই। তাই তাদের মনে হয়েছে, এই টাকা অবৈধভাবে অর্জিত। গাড়ি-ফ্ল্যাটও তার নিজেরই। অবৈধ সম্পদ বৈধ করতে অন্যান্যের নামে কিনেছেন বলে ধারণা দুদকের। ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর, ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক ও ফেনসিডিলসহ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন থেকে গ্রেফতার হন চট্টগ্রামের তখনকার জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস। সে সময় তিনি গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের ঘুষ বাণিজ্যের পেছনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সেখানকার তৎকালীন ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিকের নাম বলেন। ওই তথ্যের সূত্র ধরে দুদকের অনুসন্ধানী টিম পার্থ গোপালকে সেগুনবাগিচার কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধার করা হয়। পার্থ গোপাল বণিককে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।