চুকনগরে কালের সাক্ষী ২০০ বছরের পুরনো বটগাছ

0
1696

চুকনগর প্রতিনিধি:
কালের সাক্ষী হয়ে দুইশ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ৫নং আটলিয়া ইউনিয়নের চুকনগর গ্রামের বট গাছটি। শুধু এটিকে বট গাছ বললে ভুল হবে এ গাছ শত বছরের স্মৃতি। খুলনা সাতক্ষীরা মহাসড়কের ধার ঘেষে চুকনগর সরদার পাড়া ও খা-পাড়ার পাশে পুরো ঈদগাহ ময়দানে ছড়িয়ে পড়েছে গাছটির বিশাল শাখা প্রশাখা। শিকড় বাকড়ে ছেয়ে গেছে ঈদগাহ। আজও বট গাছটি রয়েছে তাজা তরুণ আর চিরসবুজ। যেন বার্ধক্যের ছাপ একটুও পড়েনি তার গায়ে। আর সে কারণেই এ বট গাছকে ঘিরে রয়েছে নানা রহস্য নানা ঘটনা নানা স্মৃতি। এ গাছের ডালপালা যেমন চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে তেমনি এর গল্প কাহিনী আর কল্পগাথাও বছরের পর বছর ধরে ডালপালা গজিয়েছে। এসব কারণে এ গাছটিকে দেখতে আসে আশপাশের জেলার অনেক দর্শনার্থী। গাছটির বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ করেন অনেক ইতিহাস অনুসন্ধানীরা। এসব বিবেচনায় এলাকাবাসীর দাবি উঠেছে গাছটিকে প্রাচীন ঐতিহ্যের সাক্ষী হিসেবে টিকিয়ে রাখার। মূল্যবান সম্পদ হিসেবেও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি সচেতন মহলের। ইতিহাস ঐতিহ্যের অনেক দুর্লভ স্মৃতি এ গাছটি মূল্যবান উপাদান হতে পারে বলে মনে করছেন তারা। গাছটির ঝুলন্ত লতা আর শেকড় নেমে শত শত গাছের সৃষ্টি হয়েছে। মুসলিমরা গাছটিকে উপকারী বৃক্ষ হিসেবে সমীহ করে। কৃষকরা ও মহসড়ক দিয়ে আসা হাজারো পথিক বটগাছের শীতল ছায়ায়ই বিশ্রাম নেন। ডাল পাতায় পরিপূর্ণ গাছটি যেন পথিকের বিশ্রামের আশ্রয়স্থল। এই বিস্তৃত বটগাছের দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাখির কলকাকলি মুখরিত শীতল পরিবেশ বিমুগ্ধ চিত্তকে বিস্ময় ও আনন্দে অভিভূত করে। এ গাছটি শুধু ইতিহাসের সাক্ষী নয় এ যেন দর্শনীয় আশ্চর্যের কোন উপাদান। এক বিঘার অধিক জমির উপরে এ গাছটি দর্শনার্থীদের কাছে দারুণ আকর্ষণীয়। মূল বটগাছটি থেকে নেমে আসা প্রতিটি ঝুড়িমূল কালের পরিক্রমায় এক একটি নতুন বটবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। ঝুড়িমূল থেকে সৃষ্ট প্রতিটি বটগাছ তার মূল গাছের সাথে সন্তানের মতো জড়িয়ে আছে। কথিত আছে বটবৃক্ষের নীচে বসে শীতল বাতাস গায়ে লাগালে নাকি মানুষও শতবর্ষী হয়। এ বিষয়ে খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক প্রাক্তন অধ্যক্ষ এ,বি,এম শফিকুল ইসলাম বলেন, বাপ দাদার আমল থেকেই দেখে আসছি এই বটগাছ। দিন দিন বট গাছ বিলুপ্তির পথে। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে গাছটি রক্ষনাবেক্ষণের দাবি জানান। বিশিষ্ট সমাজ সেবক আওয়ামীলীগ নেতা সরদার শরিফুল ইসলাম জানান, দাদার কাছে শুনেছি এ গাছের ডালপালা কাটা যেত না। এমনকি ভয়ে কেউ পাতাও ধরত না। সেই ভয়ে এখনো অনেকে গাছের ডালপালা ভাঙে না। যখন গাছে ফল পেকে যায় তখন লাল রঙে ছেয়ে যায় পুরো ঈদগাহ ময়দান। ঐতিহ্যবাহী এ বটগাছটি সংরক্ষণ করা হলে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়বে। ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য বি,এম, হাবিবুর রহমান হবি বলেন, দীর্ঘদিনের স্মৃতি বিজড়িত এ গাছটিকে রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানান।