চিকিৎসার সুযোগ নিশ্চিত করুন

0
230

করোনাভাইরাস বা কভিড-১৯ মহামারি আকারে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। এরইমধ্যে এই সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশও করোনার আক্রমণ থেকে মুক্ত নয়। এরইমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৭০-এ পৌঁছেছে এবং মৃত্যু হয়েছে আটজনের। এ অবস্থায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে ঘরের বাইরে না যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু করোনা প্রতিরোধের এই ব্যাপক আয়োজনের মধ্যে অন্যান্য রোগ ব্যবস্থাপনায় আমরা কি প্রয়োজনীয় মনোযোগ দিতে পারছি? সম্ভবত পারছি না।
প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, দেশে এরইমধ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২৭১ জন। গত বছর একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৭৩। গত বছরের ডেঙ্গুর ভয়াবহতা স্মরণ করে মানুষ এখনো ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে। এরইমধ্যে বৃষ্টি হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশা এডিসের বংশবিস্তার দ্রুততর হবে এবং ডেঙ্গুর প্রকোপও অনেক বেড়ে যাবে। তাঁরা মনে করছেন, আমাদের সিটি করপোরেশনগুলোর মশক নিধন অভিযান সেই তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে আছে। শুধু ডেঙ্গু নয়, ইনফ্লুয়েঞ্জাজনিত নিউমোনিয়া ও শ্বাসতন্ত্রের রোগের প্রকোপও এ বছর অনেক বেশি। ২০১৮-১৯ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০ হাজার ৪৪৬ এবং মারা গিয়েছিল সাতজন; গত নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পাঁচ মাসে আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ১১ হাজার ৭৩৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। বিপজ্জনক অবস্থা হয়েছে এসব রোগীর চিকিৎসা নিয়ে। করোনাভীতিতে অনেক বেসরকারি ক্লিনিক বন্ধ হয়ে গেছে, অনেক ক্লিনিক জ¦রের রোগীদের চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করছে। তার ওপর ইনফ্লুয়েঞ্জাজনিত নিউমোনিয়া রোগীর লক্ষণ-উপসর্গ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর অনুরূপ হওয়ায় অনেক চিকিৎসক তাদের চিকিৎসা দিতে ভয় পান অথবা অপারগতা প্রকাশ করেন। করোনা সন্দেহে আইসোলেশনে রাখা কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর দেখা গেছে, অনেক রোগীই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন। স্বজনদের অভিযোগ, প্রায় বিনা চিকিৎসায়ই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে গৃহীত পদক্ষেপ যথার্থ এবং আরো জোরদার করা প্রয়োজন। অন্যান্য রোগব্যাধির ব্যাপক প্রাদুর্ভাব যাতে না হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে, রোগীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। ডেঙ্গু রোধে সিটি করপোরেশনগুলোকে মশক নিধনে আরো জোরদার অভিযান চালাতে হবে।