চা-বিক্রেতার ফোন, খাবার নিয়ে হাজির ইউএনও

0
693

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনাটাইমস :
খুলনার চালনা পৌরসভার নলোপাড়ার লুৎফর সেখ একজন চা বিক্রেতা। চায়ের দোকানের আয় দিয়ে স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ চারজনের সংসার চলে। কিন্তু করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চলাচল সীমিত করে দিলে সংসারের আয়ের একমাত্র অবলম্বন চায়ের দোকানটিও বন্ধ হয়ে যায়। খেয়ে-না-খেয়ে কষ্টে দিন কাটছিল তাদের।

এই অবস্থায় ঘরে দুদিন ধরে খাবার নেই জানিয়ে কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল ওয়াদুদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে ফোন দেন চা-বিক্রেতার স্ত্রী। গতকাল শনিবার রাত নয়টার দিকে কল করেন তিনি। ইউএনও চা-বিক্রেতার নম্বরে কল করে সব জেনে রাতেই খাদ্য সহায়তা নিয়ে তাঁর বাড়িতে হাজির হন।

ইউএনও বলেন, চা-বিক্রেতার স্ত্রী তাসলিমা বেগম সরকারি নাম্বারে ফোন করে বলেন, তাদের বাড়িতে দুইদিন ধরে কোনো খাবার নেই। না খেয়ে দিন পার করছেন। এ খবর পেয়ে তিনি নিজেই চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ওই বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর মতে, এতে করে বিত্তবানরা উৎসাহিত হবেন। তাঁরাও হতদরিদ্রদের খাবার বিতরণ করবেন।

খাদ্য সহায়তা পেয়ে খুশি গৃহবধূ তাসলিমা বেগম। তিনি জানান, করোনাভাইরাসের প্রভাবে সবকিছু প্রায় বন্ধ। নয়দিন ধরে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন স্বামী লুৎফর সেখ। ফুরিয়ে গেছে বাসার সব খাবার। ফলে খাদ্যাভাবে দুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে বাসার উনুন। খিদের জ্বালায় সমানে কেঁদে যাচ্ছিল ছোট ছেলে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো উপায় না দেখে তাসলিমা ফোন দেন ইউএনওর নম্বরে। এর এক ঘন্টার মধ্যেই বাসায় ত্রাণ নিয়ে হাজির হন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এই ত্রাণ দিয়ে তাও পরিবারের ছয়দিনের খাবারের যোগান হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদ খুলনাটাইমসকে বলেন, ‘ভুক্তভোগীর মোবাইল নম্বর দিয়ে কল করে ওই গৃহবধূ বলেন যে তাঁর স্বামীর চায়ের দোকানটি বন্ধ। আয় না থাকায় খাবারের কষ্টে আছেন তাঁরা। রাতেই কিছু খাদ্যসামগ্রী তাঁর বাসায় দিয়ে আসি।’ তিনি এই দুঃসময়ে কেউ যাতে কষ্টে না থাকেন, এ ব্যাপারে প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সমাজের সবার প্রতি আহবান জানান। মানুষ কষ্টে আছে জানলে সঙ্গে সঙ্গে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।