ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ খুলনায় আঘাত হানতে পারে শুক্রবার সন্ধ্যায়, ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

0
894

নিজস্ব প্রতিবেদক : হ্যারিকেনের গতি নিয়েই (ঘণ্টায় ১১৮ কিলোমিটারের বেশি গতি) ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনাঞ্চলে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। সুন্দরবন কিছুটা সুরক্ষা দিলেও ক্ষয়ক্ষতি কম হবে- এমন কথা বলা যাচ্ছে না। বর্তমানে ভারতের পূর্ব-উপকূল ঘেঁষে উত্তরের দিকে এগোতে থাকা ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ নিয়ে এমন আভাসই দিচ্ছেন বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ফণী বর্তমানে পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। এটির গতিপথ ও বৈশিষ্ট্য বলছে, পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনার ওপর একই রকম গতিতে আঘাত হানবে ‘ফণী’।
এটি বর্তমানে উড়িষ্যা উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। এরপর উপকূল ঘেঁষে ঘেঁষে পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনার ওপর আঘাত হানবে। মূলত খুলনা অঞ্চল দিয়েই এই ঝড় আসবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামছুদ্দিন আহমদ। তাই খুলনা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত থেকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জানানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামছুদ্দিন আহমদ ‘ফণী’ নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
এছাড়া চট্টগ্রামকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী ও চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর এলাকায় ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজারকে এখনো ৪ নম্বর সংকেতই দেখানোর কথা বলা হয়েছে।
এদিকে সন্ধ্যার পরে আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, এটি বর্তমানে উড়িষ্যা উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। এরপর উপকূল ঘেঁষে ঘেঁষে পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনার ওপর আঘাত হানবে। ঘূর্ণিঝড়টি লাটিমের মতো একটি ব্যাপ্তি নিয়ে ঘুরে ঘুরে এগোচ্ছে। যেটা বডিলি মুভমেন্ট বলা হয়। এভাবে সে উপকূলের দিকে ১৫ থেকে ১৮ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনায় আঘাত হানলে সুন্দরবন কিছুটা ঢালের কাজ করবে। কিন্তু ‘ফণী’র তীব্রতা এতোই বেশি যে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলেই শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আবহাওয়াবিদ সুমন সাহা বলেন, পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনায় ‘ফণী’ তার ৭৪ কিলোমিটার ব্যাপ্তি নিয়ে আঘাত হানবে ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার বেগে। এই গতি হ্যারিকেনের তীব্রতার। এই বেগে আঘাত হানলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুব বেশিই হবে। হয়তো সুন্দরবন কিছুটা সুরক্ষা দেবে। কিন্তু এতে তেমন কিছু লাভ হবে না।
আবহাওয়া অফিস আগেই জানিয়েছে, শুক্রবার সকালেই ‘ফণী’র অগ্রভাগ চলে আসবে খুলনায়। অর্থাৎ ঝড়ো হাওয়া, দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাত হবে। আর আঘাত হানবে বিকেল নাগাদ।