ঘূর্ণিঝড় নয়, দাকোপে এলো আরেক ‘ফণী’ পেল সরকারের সহায়তা

0
884

আজিজুর রহমান, খুলনাটাইমস :
চারপাশে যখন প্রাকৃতিক ঘূর্ণিঝড় ‘ফণীর’ ঝড়োহাওয়া বইছে, তখন পৃথিবীতে আগমণ ঘটে আরেক ‘ফণীর’। প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণীর’ আতঙ্কের মুখে মায়ের কোল আলো করে আসে এক শিশুকন্যা। বঙ্গোবসাগরে সৃষ্ট প্রবল শক্তি সঞ্চায়কারি ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ শুক্রবার (৩ মে) সকালের দিকে আরও ঘণীভূত ও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানার জন্য এগিয়ে আসছিল, তখনি ঝড়ের তাণ্ডব থেকে রক্ষা পেতে আশ্রয়কেন্দ্রে মাসুম গাজী ও রেশমা খাতুন নামের দম্পতি আশ্রয় নিলে তাদের কোলজুড়ে জন্ম নেন একটি কন্যাসন্তান। প্রবল ওই ঝড়ের মাঝে জন্ম নেয়ায় শিশুটির নাম রেখেছেন ‘ফণী খাতুন’।

এ ঘটনাটি ঘটেছে খুলনার দাকোপ উপজেলার মাসুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারে শুক্রবার রাতে এই আশ্রয়কেন্দ্রে। ওই দুই দম্পতি উপজেলা সদর চালনা পৌরসভার বাসিন্দা। ওই নবজাতকের পিতা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি ও মা একজন গৃহিনী। ঝড়ের মধ্যে খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে সবধরণের সেবা প্রদান করেন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

নবজাতকের পিতা মাসুম গাজী বলেন, স্ত্রী গর্ভবতী থাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণীর’ তাণ্ডব হতে রক্ষার্থে বিকেলে ওই আশ্রয়কেন্দ্রে এসে নিরাপত্তা নেই। এরমধ্যে ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকে স্ত্রীর প্রসব বেদনায় কাতর হয়ে পড়ে। পরে এই নিরাপদ স্থানে তাদের কোলজুড়ে আসে একটি ফুটফুটে শিশুকন্যা।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সঞ্জীব দাশ বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে মুঠোফোনে ওই গৃহবধূর প্রসবের খবর জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে মা ও আসন্ন নবজাতকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এতে সুস্থ্যভাবে ওই দম্পতির কোলজুড়ে একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেন।

দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদ খুলনাটাইমসকে বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদায়ের নির্দেশনা মোতাবেক সোমবার (৬ মে) বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই শিশুটির জন্য পোশাক, নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। তিনি আরও বলেন, তাদের বাসস্থানের জীর্ণ অবস্থা দেখে জেলা প্রশাসককে অবহিত করার সঙ্গে সঙ্গে ‘জমি আছে, ঘর নেই’ প্রকল্পের আওতায় একটি পাঁকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন। ইউএনও বলেন, তাদের নিজস্ব কোন জমি-জায়গা না থাকায় সদরের আঁচাভূয়া বাজার সংলগ্ন সরকারি একটি খাসজমিও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, জন্মের স্মৃতিকে স্মরণীয় রাখতে তার নাম রাখা হয়েছে ‘ফণী খাতুন’।