ঘরে বসে কাজ: ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন যেভাবে

0
299

খুলনাটাইমস জীবনযাপন ডেস্ক: করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে বাঁচার একটাই উপায় আর তা হল নিজেকে ঘরে আবদ্ধ করে ফেলা। অনেকেই ঘরে বসে কাজ করছেন। বাইরে যেয়ে হাঁটাহাঁটি, জিম এমনকি বাজার করতে যাওয়া পর্যন্ত বন্ধ। এমন অবস্থায় অনেকেই ওজন বেড়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তায় আছেন। এর কারণও নিতান্ত অমূলক নয়। ঘরে থাকা মানেই যে সেডেন্টারি লাইফস্টাইল বা শুয়েবসে থাকা জীবনযাপন। অনেকেই হয়ত বিছানা থেকেই নামবেন না। সেখানে বসেই অফিসের কাজ সারবেন। এ ছাড়া করোনাভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তা এবং স্ট্রেসের ফলে অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগার প্রবণতাও তৈরি হচ্ছে অনেকের। ফলাফল হিসেবে দেখা দেবে পেটে চর্বি জমাসহ অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা। ওয়ার্ক ফ্রম হোমের অভ্যাস আপনার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হিসেবে দেখা দেওয়ার আগেই তাই আসুন বদলে ফেলি আমাদের লাইফস্টাইল।
নিয়মের মধ্যে থাকুন
ওয়ার্ক ফ্রম হোম বা কোয়ারেন্টাইন মানেই খুশি হয়ে বেহিসাবি জীবনযাপন করা যাবে না। আগেও যেভাবে রুটিনের মধ্যে থাকতেন, এখনও তেমনি রুটিনের মধ্যেই থাকতে চেষ্টা করুন। রাতে সকাল সকাল শুয়ে পড়ুন এবং সকালে আগের মতই আগেভাগে ঘুম থেকে উঠুন। এভাবে সারাদিনের সব কাজ একটা রুটিনের মধ্যে করুন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ঘরে, বারান্দায় বা ছাদে যেয়ে হাঁটাহাঁটি করুন। সব মিলিয়ে নিয়মের মধ্যে থাকলে সেডেন্টারি বা অলস জীবনযাপনে অভ্যাস হবে না এবং আপনি নিজের উপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ আনতে পারবেন।
নিজেকে ব্যস্ত রাখুন
অনেকেই বলে ঘরে থাকলে যখন তখন ক্ষুধা পায়। এর থেকে মুক্তির জন্য নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। কাজে ব্যস্ত থাকলে মানসিকভাবেও ব্যস্ত থাকবেন। ঘরে বসে কাজ করার মত নতুন ঘটনার সঙ্গে তাল মেলাতে যেয়ে আপনি বিরক্ত হয়ে যেতে পারেন। ফলাফল হিসেবে অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়ার প্রতি ঝোঁক তৈরি হতে পারে। সুস্থ থাকতে চাইলে কিছুতেই এই অভ্যাস করা যাবে না। ঘরের এমন জায়গায় বসে কাজ করুন যেখান থেকে ফ্রিজ, রান্নাঘর বা খাবার ঘর সরাসরি দেখা যায় না। চোখে না পড়লে খাবার খাওয়ার ইচ্ছাও হবে কম।
আগের থেকে খাবার প্রস্তুত রাখা
বাসায় বসে কাজ করতে যেয়ে কখন কী খাবেন তা নির্ধারণ করা একটু কঠিনই বটে। তবুও প্রতিবেলার খাবার আগেই পরিকল্পনা করে রাখুন। প্রয়োজনে লিখে রাখুন। লেখা খাবারের তালিকা দেখলে আপনার মনে একধরণের তৃপ্তির ভাব আসবে।
এমনকি কখন কী স্ন্যাকস বা হালকা খাবার খাবেন সেটিও পরিকল্পনার মধ্যেই রাখুন। আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাখলে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস ঠিক থাকবে। আবার অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতাও কমবে। এছাড়াও লক ডাউনের এই সময়ে চাইলেও বাইরে যেয়ে খাবার কিনতে পারবেন না। সেকথা নিজেকে স্মরণ করান ও নিয়ন্ত্রিত খাবার খান।
কায়িক পরিশ্রম করুন
ওয়ার্ক ফ্রম হোম মানে কিন্তু শুধুই অফিসের কাজ না। অফিসের কাজ অফিসের সময় অনুযায়ীই করুন। এর ফাঁকে ফাঁকে ঘরের কাজ করুন। নিয়মিত রান্নাবান্না, ঘরবাড়ি পরিষ্কার, কাপড়চোপড় ধোঁয়ার কাজগুলো করুন। শারীরিকভাবেও সচল থাকবেন, অতিরিক্ত খাওয়ায়র প্রবণতাও কমবে। যাদের বাড়িতে গাছপালা আছে তারা গাছের যত্ন নিন। বাড়িতে থাকা শিশু সন্তান ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটান। এটিও আপনাকে শারীরিকভাবে একটিভ রাখবে।
পানি পান করুন
এই একটা অভ্যাসই পারে অনেকগুলো সমস্যার সমাধান করতে। দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান শুধু ওজনই নিয়ন্ত্রণে রাখবে না, যখন তখন খাওয়ার প্রবণতাও নিয়ন্ত্রণে রাখবে। এছাড়াও কাজের টেবিলের পাশে এক বোতল পানি রাখুন। কজের ফাঁকে অথবা ক্ষুধা লাগলেই পানি পান করুন।
কোনবেলার খাবার বাদ দেবেন না
অতিরিক্ত খাবার অথবা ভাজাপোড়া খাবার বাদ দেওয়ার পাশাপাশি কোনবেলার খাবারও বাদ দেওয়া যাবে না। বাসায়ই তো আছি ভেবে এখনকার খাওয়া তখন খাবো করবেন না। এতে করে স্ন্যাকস জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়বে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও সঠিক মেটাবলিজম বজায় রাখতে প্রতিবেলায় ঠিকমত খাবার খান।