খুলনা সিটি নির্বাচনের উপযোগী হবে আগামী বছর মার্চের পর

0
1146

এম জে ফরাজী, খুলনা টাইমস প্রতিবেদক:
আগামী বছরের শেষ দিক একাদশ সংসদ নির্বাচন করার রোডম্যাপ রয়েছে ইসির। জাতীয় নির্বাচনের আগেই খুলনা সিটি করপোরেশনসহ নির্বাচন উপযোগী ছয় সিটির ভোট শেষ করতে হবে এই সাংবিধানিক সং¯াক। সেই হিসেবো চলতি বছর ডিসম্বরের শেষ ভাগে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে আগামী মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সভায় কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ।
সূত্র জানায়, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন একসঙ্গে ভোট হয় ২০১৩ সালের ১৫ জুন। খুলনা সিটির প্রথম সভা হয় ২৬ সেপ্টেম্বর। ২০১৮ সালর ২৫ সেপ্টেম্বর মেয়াদ পূর্ণ হবে। ৩০ মার্চ থেকে নির্বাচন উপযাগী হবে এ সিটি। সিলেট সিটির প্রথম সভা হয় ওই বছর ৯ সেপ্টেম্বর। মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। ১৩ মার্চ থেকে ৮সেপ্টেম্বরর মধ্যে ভোট করতে হবে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা হয় ৬ অক্টোবর। মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর। ৯ এপ্রিল থেকে ওই সময়ের মধ্যে সেখানে নির্বাচন করতে হবে। বরিশাল সিটির প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর। এ সিটিতে ২০১৮ সালের ২৭ এপ্রিল থেকে ২৩ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।
আর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ ভোট হয় ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর; মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর। সে অনুযায়ী ৮ মার্চের পর নির্বাচন করা যাবে। দলীয় প্রতীক সিটি নির্বাচন চালুর পর নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লায় ভোট হয়েছে। এ ধারবাহিকতায় বাকি নির্বাচনগুলোও দলভিত্তিক হবে।
নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, আইনি জটিলত না এলে ডিসম্বরেই রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন করার প্রস্তুতি রয়েছে। এজন্য তফসিল ঘোষণা করা হবে নভম্বরে।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্মসচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ আহম্মদ খান বলেন, ডিসম্বরো রংপুর সিটির ভোট করার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। এখন পরবর্তী করণীয় ও তফসিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কমিশন সভায়। ডিসেম্বরের শেষার্ধে ভোট করতে গেলে কমিশন নভম্বরের প্রথমার্ধে সুবিধাজনক সময়ই তফসিলের জন্য বেছো নিতে পারে।
তিনি জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ থাকায় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ভোটের পরিকল্পনা রাখা হয়নি। রংপুরের পর বাকি পাঁচ সিটিতে ভোট নির্ধারিত মেয়াদ করার কর্মপরিকল্পনা কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হবে। কে এম নূরল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশনের তত্ত্ববধানে এই নির্বাচন হবে রংপুর সিটি করপোরশনের দ্বিতীয় নির্বাচন। দলীয় প্রতীকেই এ ভোট মেয়র পদ প্রার্থী হওয়া যাবে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নিয়ে পাঁচ দিনের মাথায় কুমিল্লা সিটির ভোট করেছিল বর্তমান কমিশন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অংশগ্রহণ সেটাই ছিল এ ইসির অধীনে প্রথম নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সব দলের অংশগ্রহণে ভোট করার লক্ষ্যে ইতামধ্যে সংলাপ শোষ করেছে কমিশন। এ অবস্থায় রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ইসির আস্থা অর্জনের গুরত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসাব দেখছেন বিশ্লেষকরা।
২০১২ সালর ২০ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো রংপুর সিটি করপারশনে ভোট হয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ৫ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে হিসাবে ২০১৮ সালের ১৮ মার্চের মধ্যে রংপুরে নির্বাচন করতে হবে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিজেদের তৈরি ইভিএম ব্যবহারের ভাবনা থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্যর কারণে ইতামধ্যে সে উদ্যোগ থেকে সরে এসেছে ইসি। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে তা ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। রংপুরে স্বল্প পরিসরে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে তিন মাস আগে প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হলেও কমিশন এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানান ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ডিসেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক পরীক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে রংপুর এবং এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সূচি পর্যালোচনা করে বাকি সিটির ভোটোর দিন নির্ধারণ করবে কমিশন।