খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিক্ষককে কুপিয়ে জখম, খুমেকে ভর্তি : শিক্ষার্থী বহিষ্কার

0
441

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নগরীর খালিশপুর থানাধীন খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট’র মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টাল এর শিক্ষক অমল কৃষ্ণ রায় (৩৮)কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে। তাকে গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে পেইং বেডে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার (২৯ মে) বেলা দেড়টার দিকে কলেজ গেটের সামনে মুখোশধারী ৫-৮ জন মিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। আহত শিক্ষক খালিশপুর হালদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ভবরঞ্জন রায়ের পুত্র।
খুমেক ভর্তি আহত শিক্ষক অমল কৃষ্ণ রায় বলেন, পরীক্ষায় নকল করায় খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কলেজের আইপিসিটি বিভাগের ৬ষ্ঠ পর্বের শিক্ষার্থী আজিজুর রহমানকে বহিষ্কার করেন তিনি। ২৭ মে কলেজে বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা চলছিল। ওই দিন ওই ছেলেসহ আইপিসিটি বিভাগের ৮ম পর্বের আরও এক ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়। ছাত্র আজিজুর রহমান তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি শিক্ষক অমল কৃষ্ণ রায় কলেজের প্রিন্সিপাল নূরুজ্জামান প্রামাণিককে লিখিতভাবে অবহিত করেন। এরই জের ধরে ওই দিন রাতে শিক্ষক অমল কৃষ্ণ রায়ের বাড়িতে গিয়ে ২০-২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী ওই বহিষ্কারটি প্রত্যাহার করার জন্য হুমকি প্রদান করে। বিষয়টি কলেজের প্রিন্সিপালকেও জানান শিক্ষক অমল কৃষ্ণ রায়। এরই জের ধরে মঙ্গলবার কলেজ শেষে শিক্ষক অমর কৃষ্ণ রায় বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলে কলেজ গেটে মুখোশ পরা ৫-৮ জন যুবক তার ওপর ধারালো চাইনিজ কুড়াল, রড ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তার মাথায় কোপ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত পান।
ওই কলেজের মেক্যানিক্যাল বিভাগের প্রধান আঃ গনি জানান, আমরা এক সাথে বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছিলাম। কলেজ গেটের সামনে আসলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা মুখোশ পরা ছিল ও কয়েকজনকে কলেজের ড্রেস পরা অবস্থায় দেখা যায়। মুখ বাঁধার কারণে কাউকে চিনতে পারিনি। ওরা ২০-২৫ জন বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো ছিটানো ছিল।
কলেজের প্রিন্সিপাল নূরুজ্জামান প্রামাণিক বলেন, ওই দিন যে ছেলেটিকে নকলের দায়ে বহিষ্কার করা হয়েছিল সে ছেলেটি ওই শিক্ষককে হুমকি দিয়েছিলো। এরপর বাসায় তাকে হুমকি ধামকি দেয়, বিষয়টি শিক্ষক অমল কৃষ্ণ রায় আমাকে অবহিত করলে আমি তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দিয়েছি। প্রিন্সিপাল নূরুজ্জামান প্রামাণিক বলেন, হামলার বিষয়টি খালিশপুর থানা, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার ও ডিসিকে স্যারকেসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃকপক্ষকে মৌখিক ও লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।
খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরদার মোশারফ হোসেন বলেন, ঘটনার পর সরেজমিনে আমাদের পুলিশ ফোর্সকে পাঠানো হয়েছে। আমরা তাদেরকে বলেছি লিখিত অভিযোগ দেন কারা ঘটাতে পারে। হামলার শিকার ওই শিক্ষক কাউকে চিনতে পারেনি। তারা অভিযোগ দিলে আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।
পেইং বেডে দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স শিখা ও চন্দনা জানান, ওই শিক্ষকের মাথায় ৪-৫টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হাতে ও পায়ে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। তবে মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে এখনও তিনি পুরোপুরি আশঙ্কামুক্ত নন।