খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত বকেয়া মজুরীর তথ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের নির্দেশ

0
541

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বকেয়া পাওনা পরিশোধসহ ৯ দফা দাবিতে খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা কর্মবিরতির পাশাপাশি ৩ ঘন্টা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। গতকাল বুধবার ভোর ৬টায় স্ব স্ব কর্মস্থলে না যেয়ে পাটকলের প্রায় অর্ধলাখ শ্রমিকরা প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে আন্দোলনের টানা ১০ দিনে এ কর্মসূচি পালন করছে। পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দ, বকেয়া মজুরী -বেতন পরিশোধ, মজুরী কমিশন কার্যকর ও প্রতি সপ্তাহর মজুরী প্রতি সপ্তাহে প্রদানসহ ৯ দফা দাবীতে পাটকল শ্রমিক লীগের ডাকে দীর্ঘদিন শ্রমিকরা রাজপথে আন্দোলন করছে।
গতকাল বুধবার কর্মবিরতির ১০ দিনে ভোর ৬টায় শ্রমিকরা নিজ নিজ কর্মস্থলে না যেয়ে এ কর্মসূচি পালন করে। দুপুর সাড়ে ৩টায় ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, ষ্টার, আলীম, ইষ্টার্ণ, কার্পেটিং ও জেজেধাই জুট মিলের শ্রমিকরা থালা হাতে নিয়ে স্ব স্ব মিল গেটে সমবেত হয়। পরে বিকাল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নতুন রাস্তা মোড়, আটরা ও রাজঘাটের খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবস্থান করে। পাওনার দাবিতে শ্রমিকরা মহাসড়ক ও রেললাইনের উপর বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় শ্রমিকরা রাজপথে জামাতের সাথে আসরের নামাজ আদায় করে। পরে আন্দোলনকারীরা মহাসড়কের সকল যান ও রেললাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রাজপথ রেলপথ অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। ফলে নতুন রাস্তা, আটরা ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম দূর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা। ক্রিসন্টে, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর ও দিঘলিয়ার ষ্টার জুট মিলের শ্রমিকরা খালিশপুর নতুন রাস্তা মোড়, আটরা শিল্প এলাকার আলীম , ইর্ষ্টাণ জুট মিলের শ্রমিকরা আলীম মিল গেট খুলনা-যশোর মহাসড়ক এবং নওয়াপাড়ার কার্পেটিং ও জেজেআই জুট মিলের শ্রমিকরা রাজঘাট শিল্প এলকায় অবরোধ স্থানেই বসে ইফতার করেন। পরে পৃথক ৩ স্থানে খুলনা-যশোর মহাসড়কে মাগরিবের নামাজ পড়ে অবরোধ শেষ করে আন্দোলনকারীরা। অবরোধ চলাকালে এক সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাটকল শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সরদার মোতাহার উদ্দীন, শ্রমিক নেতা মোঃ মুরাদ হোসেন, মোঃ সোহরাব হোসেন, শাহানা শারমিন, হুমায়ুন কবির, আবু দাউদ দ্বীন মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হেমায়েত উদ্দীন আজাদী, আবু জাফর, মোঃ পান্নু মিয়া, খলিলুর রহমান, মোঃ তরিকুর ইসলাম, পাটকল শ্রমিক লীগ নেতা মাহমুদুল হাসান, এস এম আজম, আবু হানিফ, আব্দুল মজিদ বকুল, মোঃ সেলিম শিকদার, সরদার আলী আহম্মেদ, মোঃ সাহিদুল ইসলাম সাহিদ, আইয়ুব আলী, বেলায়েত হোসেন ও আবু হানিফ। আটরা ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার আলীম, ইষ্টার্ণ, কার্পেটিং, জেজেধাই জুট মিলের শ্রমিকদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সিবিএ-নন সিবিএ ও পাটকল শ্রমিকলীগের নেতারা এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
এদিকে পাট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিজেএমসি রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬ পাটকলের শ্রমিক ও কর্মচারীদের বকেয়া মজুরী-বেতনের সঠিক হিসাবে চেয়েছেন। পাওনা শ্রমিকর ও কর্মকর্তারদের পৃথক পৃথক ভাবে তালিকা তৈরী করে তা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলের প্রকল্প প্রধান মঈনুল করিম জানান, শ্রমিক ও কর্মচারীদের কয়টা মজুরী ও বেতন বকেয়া রয়েছে তা জানতে বিজেএমসি কর্তৃপক্ষ টেলিফোন করেছে। পাওনাদার শ্রমিকদের মজুরীর ও কর্মকর্তাদের বেতনের হিসাব শ্রমিক, কর্মচারী,কর্মকর্তাদের পৃথক পৃথক ভাবে নামের তালিকা করে তা দ্রুত বিজেএমসিতে প্রেরণেরও নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান প্লাটিনামের এক প্রকল্প প্রধান।