খুলনায় হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয় রাবেয়াকে, সৎ বাবার স্বীকারোক্তি

0
333

নিজস্ব প্রতিবেদক: খুলনার লবণচরায় রাবেয়া খাতুন (১২) নামের এক সৎ মেয়েকে হত্যা করে ঘরে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন এক পাষন্ড বাবা মােঃ শফিকুল ইসলাম (২৯)। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আদালতে সোপর্দ পূর্বক পুলিশের আবেদনে তাকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠায়।
শুক্রবার রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এ হত্যাকান্ডের স্বীকারােক্তিমূলক বিচারিক জবানবন্দী প্রদান করেছেন। শফিকুল ইসলাম বাগেরহাট জেলার মােরেলগঞ্জ থানার বার“ইখালী গ্রামের মৃত আঃ সালামের ছেলে। তিনি লবণচরা থানাধীন হরিণটানার রিয়াবাজার এলাকার মক্কা লেন গলির মনজু বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
পুলিশ জানায়, গত ২৪ মার্চ সকাল অনুমানিক ১০ টায় শফিকুল ইসলাম (২৯) তার সৎ মেয়ে রাবেয়া খাতুনকে ওড়না দিয়ে গলা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে নিজ ভাড়া বাসার ঘরে বাঁশের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় লবনচরা থানাতে মেয়েটির মামা আব্দুস সালাম (৩৫) বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলা নং- ০৭, তারিখ ২৪/০৩/২০২০, ধারা ৩০২ পেনাল কোড ১৮৬০। একই দিনে লবনচরা থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে রাত ১১ টায় শফিকুল ইসলামকে নিরালা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেন।
এরপর ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আসামীর মেয়ে শরীফা (০৪) গত ২৫ মার্চে আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারাতে জবানবন্দী প্রদান করে।
এসময়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই নাসির উদ্দিন মোল্লার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত শফিকুল ইসলামকে তিন দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে শফিকুল ইসলাম হত্যাকান্ডের বিষয় স্বীকার করে আদালতের ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারাতে স্বীকারােক্তিমূলক বিচারিক জবানবন্দী প্রদান করে।
তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর বরাত দিয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মনিরুজ্জান মিঠু জানান, শফিকুলকে তার সৎ মেয়ে রাবেয়া কথায় কথায় গালাগালি করত। গত ২৪ মার্চে শফিকুল বাসায় ঘুমিয়ে ছিলো। তখন বাসাতে তিন মেয়ে ছাড়া আর কেউ ছিলো না। তারা ফুল নিয়ে খেলা করতেছিলো, এতে শফিকুলের ঘুম ভেঙ্গে যায়। সে রাবেয়াকে নিষেধ করে, বেয়া তার কথা শুনেনি। সকাল ১০ টার দিকে শফিকুল রাবেয়াকে লাঠি দিয়ে মারে কিন্তু তাতে রাবেয়া উত্তেজিত হয়ে শফিকুলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। তখন শফিকুল রাগের মাথায় রাবেয়ার ওড়না রাবেয়ার গলায় পেঁচিয়ে ১০ মিনিট ধরে রাখে। তাতে রাবেয়া মারা যায়। এরপর ওই ওড়না দিয়ে রাবেয়াকে ঘরের বাঁশের সাথে ঝুঁলিয়ে রেখে শফিকুল বাড়ি হতে পালিয়ে যায়।