খুলনায় স্ব-ঘোষিত সাংবাদিকদের দৌরাত্মে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ : বিব্রত প্রশাসন

0
544

নিজস্ব প্রতিবেদক : খুলনা মহানগরীতে হঠাৎ করেই একশ্রেণীর সাংবাদিকদের আবির্ভাব ঘটেছে। নাম সর্বস্ব এসকল কথিত সাংবাদিকরা বিভিন্ন পাড়া মহল্লা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদের মধ্যে অনেকে আবার সরকারি বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের নিয়মিত হুমকী-ধামকি ও ভিজিটিং দিয়ে যোগাযোগ করার জন্য বলে আসছেন। তা নাহলে তাদের নামে ওই সকল সাংবাদিকরা সংবাদ পরিবেশন করে বেকায়দায় ফেলবেন বলে হুমকীও দিচ্ছেন। এই শ্রেণীর সাংবাদিকদের নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছে খুলনার প্রশাসন। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

খুলনার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট্র ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মোঃ আরাফতুল আলম বলেন, সাংবাদিকতার মতো একটি মহান পেশাকে ব্যবহার করে যদি কেউ সাধারণ মানুষকে হয়রানী বা সুবিধা আদায় আদায় করেন তারা আমাদের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পাবে না। তাছাড়া যদি কেউ এধরণের অন্যায় এবং বেআইনী কাজে জড়িত থাকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

খুলনা মেট্রোপলিট পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) মনিরা সুলতানা বলেন, আমাদের কাছে এধরণের কোন লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ আসেনি। তবে ভূক্তভোগিরা লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক আইনী ব্যবস্থার আশ্বাস দেন তিনি।

র‌্যাব-৬’র স্পেশাল কোম্পানী কমান্ডার মোঃ এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, সাধারণ মানুষকে অহেতুক হয়রানী করলে এটা একটি অপরাধ। আর অপরাধ করলে সে যেই হোক না কেন আইন সকলের জন্য সমান।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, খুলনার জেলা প্রশাসক, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা জেনারেল হাসপাতালসহ বেশ কিছু দপ্তরের সম্প্রতি সময়ে একশ্রেণীর হঠাৎ সাংবাদিকের আবির্ভাব হয়েছে। সাংবাদিকতার রীতি নীতি তোয়াক্কা না করে ওই সকল দপ্তর গুলোতে গিয়ে তারা নানা কায়দায় চাঁদা দাবি করছেন। টাকা চাওয়ার কারন জানতে চাইলে তারা চা-মিষ্টি খাওয়ার জন্য চায় বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খুলনার সরকারি বেসরকারি বেশ কয়েকটি দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, কখনো এদের দেখিনি। ওই সাংবাদিকরা প্রথমে অফিসে আসেন। যেহেতু তারা সাংবাদিক পরিচয় দেয় আমরা তাদেরকে সম্মানের সাথে গ্রহন করি। এরপর নানা ধরণের আলোচনা শেষে চা-মিষ্টি খেতে তারা টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে নানা ধরণের সংবাদ পরিবেশনের ভয় দেখান তারা। বিষয়টি নিয়ে এসকল কর্মকর্তারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত নানা বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে এসকল স্ব-ঘোষিত সাংবাদিকেরা চাঁদাদাবি করছেন বলেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এবিষয়টি গুরুত্ব সহকারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরী বলে মনে করেন তারা। অনেক সময় ওই সকল কথিত সাংবাদিকদের কর্মকান্ডে পুলিশ, র‌্যাবসহ এবিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকেও বিব্রতকর পরিবেশে পড়তে হচ্ছে। নান ধরণের তদ্ববির ও অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকে এ শ্রেণীর লোকজন।