খুলনায় জামিনের রি-কল জালিয়াতি আদালতের পেশকার গ্রেফতার

0
433

বিশেষ প্রতিনিধি:
খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে টাকা বিনিময়ে আসামিকে ভুয়া জামিন মঞ্জুরের রি-কল প্রদানের অভিযোগে ৪নং আদালতের স্টেনো (পেশকার) শেখ মোস্তাক আহমেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় খুলনা সার্কিট হাউজ এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩’র মামলার আসামি ৪নং আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন মর্মে ৩নং আদালতে একটি রি-কল জমা দেয়ার পর এ জালিয়াতি সামনে আসে। মামলা গায়েব ও জামিনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পেশকার মোস্তাক আসামি পক্ষে সাথে ৪ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তি করেছিলেন বলে তদন্তে ধরা পড়েছে। গ্রেফতার হওয়া পেশকার শেখ মোস্তাক বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটের ধনপুতা গ্রামের নিজামউদ্দিন শেখের ছেলে। শেখ মোস্তাক ওই কোর্টের পেশকার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর মামলার ধার্য দিনে দেখা যায় ৪নং আদালত থেকে আসামি জামিনের বিপরিতে যে রি-কল নিয়েছেন তা সঠিক নয়। পরবর্তীতে বিষয়টি তদন্ত করে ভুয়া প্রমানিত হয়।
এ ঘটনায় প্রতারণা মামলার আসামি শেখ রাজিব (৩২) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তরিকুল ইসলাম ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামি রাজিবের জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। রাজিব ঢাকা উত্তারার সেক্টর-৯, রোড নং-৯ এর ২০নম্বর বাড়িতে বসবাস করেন। সে নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বাবরা গ্রামের এসকে হান্নানের ছেলে। এ মামলার অপর আসামি রাজিবের স্ত্রী সুমনা খানম (৩০)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, দৌলতপুর পাবলা কেশবলাল রোডের মৃত. আব্দুল ওয়াদুদ মোল্লার মেয়ে হীরা খানমের কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ২৯লাখ টাকা ধার নেয় শেখ রাজিব। কিন্তু ওই টাকা ফেরৎ না দেয়ায় গত বছরের ৩ অক্টোবর হীরা খানম রাজিব ও তার স্ত্রী সুমনার বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন যার নং- ০৪। গত ১৮এপ্রিল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ থেকে রাজিব ও স্ত্রী সুমনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয় উত্তরা পশ্চিম থানায় যার প্রসেস নং ৯২/১৯ ও ৯৩/১৯। গত ২৮আগস্ট উত্তরা থানার এসআই মো. সাইফুল ইসলাম ও এএসআই মফিজুল ইসলাম আসামিরা জামিন পেয়েছেন মর্মে ৩নং আদালতে রি-কল পাঠিয়ে দেন। গত ৩সেপ্টেম্বর মামলার ধার্য দিনে দেখা যায় ৪নং আদালত থেকে যে রি-কল নেয়া হয়েছে তা উক্ত আদালতের নয়। আসামীরা নিজস্বার্থে অন্যান্যদের সহয়তায় আদালতের স্বাক্ষর ও সীল জাল-জালিয়াতি করে প্রতারণা করেছে। এঘটনায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বেঞ্চ সহকারী মো. জামাল হোসেন বাদী হয়ে শেখ রাজিব ও তার স্ত্রী সুমনা খানমের বিরুদ্ধে খুলনা থানায় মামলা দায়ের করেন যার নং- ০৬।
খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল বাহার বুলবুল বলেন, শেখ মোস্তাককে বিরুদ্ধে খুলনা থানার ৬(৯)১৯ নম্বর পেনাল কোডের মামলার রিকল জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু সাইদ জানান, মামলার আসামী রাজিবের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দির সুত্র ধরে সোমবার সন্ধ্যায় সার্কিট হাউজ এলাকা থেকে বেঞ্চ সহকারি শেখ মোস্তাককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এ জামিন জালিয়াতির সাথে জড়িত রয়েছেন বলে তথ্য রয়েছে।