খুলনার ৬টি আসনেই নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়বেন আ’লীগ প্রার্থীরা

0
1017

এম জে ফরাজী : খুলনার ৬টি সংসদীয় আসনেই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা। ৬টি আসনের মধ্যে ২টি (খুলনা-১ ও খুলনা-৬) জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে চাওয়া হলেও তাদেরকে দেওয়া হয়নি কোনো আসন। ফলে ৬টি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর দলের বিদ্রোহী ও জোটের শরিকরা রবিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন। গতকাল শনিবার দলীয় একাধিক সূত্র থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এদিকে মহাজোটের অন্যতম শরিকদল জাতীয় পার্টি (জাপা) এখনো তাদের জোটভুক্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি। জাতীয় পার্টি থেকে কারা হচ্ছেন মহাজোটের প্রার্থী তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত। তবে জোটের বাইরে গিয়ে নিজেরা চাইলে যেকোনো শরিকদল তাদের দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তারা মহাজোটের সমর্থন পাবেন না।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, প্রায় তিনশ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের। জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগ ২৪০টি আসনে শুক্রবার প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্য শরিকরা পেয়েছেন ১৬ আসন। এর মধ্যে জোটে সদ্যযুক্ত হওয়া বিকল্পধারা পেয়েছে তিনটি আসন। ২৫৬টি আসনে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন আওয়ামী লীগ ও তার জোটসঙ্গী দলের নেতারা। বাকি আসনগুলো পাচ্ছে জাতীয় পার্টি। এসব আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা লাঙ্গল প্রতীকে লড়বেন। জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির জন্য আওয়ামী লীগ ৪০ থেকে ৪২টি আসনে প্রার্থী দেয়ার সুযোগ রেখেছে।
সূত্রটি আরও জানায়, খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস। যিনি ২০১৪ সালের আগে ২০০১ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার আগে ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেড়ে দেওয়া আসনে উপ-নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হন।
খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল। যিনি এবারই প্রথম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। রাজনীতিতে তিনি নতুন হলেও খুলনাঞ্চলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তাছাড়া তার বড় ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন এ অঞ্চলের আওয়ামী রাজনীতির অন্যতম নীতি-নির্ধারক।
খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন শ্রমিক নেত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। যিনি এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। তিনি বর্তমান সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০১, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
খুলনা-৪ (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন সাবেক তারকা ফুটবলার ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম মুর্শেদী। এবারের নির্বাচনেও দল তার উপর আস্থা রেখেছে। আসন্ন নির্বাচনেও তিনি নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করবেন।
খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসন থেকে নৌকা প্রতিক নিয়ে আবারও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। যিনি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও পরে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সালাহউদ্দিন ইউসুফের মৃত্যুর পর ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে তিনি প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজিত হলেও ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হন।
খুলনা-৬ (কয়রা ও পাইকগাছা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু। যেটি খুলনায় প্রার্থী মনোনয়নে সবচেয়ে বড় চমক।