খুলনার এ্যাজাক্স জুটমিল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ

0
527

আজিজুর রহমান,খুলনা টাইমস :
খুলনায় বৃহস্পতিবার (১৬ আগষ্ট) বিকেলে ঈদুল আযহা উপলক্ষে এ্যাজাক্স জুটমিল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
সারাদেশে বিভিন্ন জুট মিলের শ্রমিকরা যখন ন্যায্য বেতন-ভাতার দাবিতে আন্দোলন করছে তখনি বন্ধ থাকা এ্যাজাক্স জুট মিলের শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতা পরিশোধ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে মিল মালিক আব্দুল মান্নান তালুকদার। মহানগরীর মীরেরডাঙ্গায় এ্যাজাক্স জুট মিলের প্রশাসনিক ভবনের সামনে চেক ও নগদ অর্থের মাধ্যমে মিলের শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বকেয়া পাওনার একটি অংশ পরিশোধ করেন কর্তৃপক্ষ।

এসময় বক্তব্য করেন, বেসরকারি পাট, সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জাহাঙ্গীর আলম সবুজ, এ্যাজাক্স জুট মিলের মহা ব্যবস্থাপক আব্দুল আলিম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা দিনার মালিক, মিলের নন সিবিএ শ্যমিক সংগঠনের সভাপতি ইমরান মীর, সিবিএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বকতিয়ার শিকদার, সহকারি সচিব আজহার বাওয়ালি, কোষাধ্যক্ষ মো. রায়হান।
বেসরকারি পাট, সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জাহাঙ্গীর আলম সবুজ বলেন, শ্রমিকদের নায্য পাওনা প্রদানের জন্য সাবিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মান্নান তালুকদারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। আশা করি তিনি পর্যায়ক্রমে সকল শ্রমিকদের সমুদয় পাওনা বুঝিয়ে দিবেন।
এ্যাজাক্স জুট মিলের মহা ব্যবস্থাপক আব্দুল আলিম বলেন, সাবিল গ্রুপ মিলটির দায়িত্ব গ্রহনের পরে শ্রমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে শুরু করি। এখন পর্যন্ত ১৬শতাধিক শ্রমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে তাদের সম্পূর্ণ পাওনা বুঝিয়ে দিয়েছি। এ ঈদে মোট ৫ শ ৭৬ জন শ্রমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে চেক ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে।

সাবিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এ্যাজাক্স জুট মিলের মালিক আব্দুল মান্নান তালুকদার বলেন, ব্যাংক ঋণসহ বিভিন্ন দেনায় জর্জরিত মিলটি হাতে নেয়ার পর থেকে আমি সোনালী ব্যাংক, বিদ্যুৎ ও সিটি কর্পোরেশনের অনেক পাওনা পরিশোধ করেছি। শ্রমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও অনেক টাকা পরিশোধ করেছি। পর্যায়ক্রমে সকল শ্রমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সকল পাওনা পরিশোধ করব। তারপর এ মিলটি আমরা চালু করব। মিলটি উৎপাদনে গেলে এখানে ৫ হাজারের অধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সাথে সাথে মিলের উৎপাদিত পন্য রপ্তানি করে দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ, ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সরকারি-বেসরকারি মিলে চারবার মিলটির মালিকানা হস্তান্তর করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেয়নি। পরে শ্রমিকদের আন্দোলন, মিলে লোকসানসহ বিভিন্ন কারণে ২০১৪ সালের ২১ মে বন্ধ হয়ে যায় মিলটি। এতে দুই হাজারের বেশি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন। ফলে মানবেতর জীবন শুরু হয় মিলটির শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের।
এরপর ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর সাবিল গ্রুপ মিলটির দায়িত্ব গ্রহণের প্রস্তুতি নেয়। তারপর ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি মিল চত্ত্বরে শ্রমিক সমাবেশের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে মিলের দায়িত্ব বুঝে নেয় সাবিল গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পর্যায়ক্রমে মিলের শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করে আসছে গ্রুপটি।