কয়রায় পাবলিক টয়লেটের অভাবে দুর্ভোগান্তিতে বাজারবাসী

0
408

কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধি:
খুলনার কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নে ব্যস্ততম বাজারে পাবলিক টয়লেট বা গণশৌচাগারের অভাবে চরম জনদুর্ভোগে বন্দি হয়ে পড়েছে কয়রা বাজারবাসী। মলমূত্রের বেগ হলে চেপে রাখা কত যে কষ্টকর গণশৌচাগার না পেয়ে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন যারা হয়েছেন তারাই বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারবেন। অথচ এ ব্যাপারে কোন মাথা ব্যথা নেই দাবি ব্যবসায়ি ও সাধারণ মানুষের। যার ফলে প্রত্যান্ত গ্রামগঞ্জ ও বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসা জনসাধারকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অন্যদিকে বৃহত্তর কয়রা বাজারে কাঁচামালের আড়ত ও মৎস আড়ত চলে সপ্তাহের ৭ দিন। এ কারণে প্রতিদিনই সাধারণত বাজারে লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এদিকে কয়রা উপজেলা পরিষদ, কয়রা থানা , সাব রেজিস্ট্রি অফিস, আদালত, ইউনিয়ন পরিষদ, কাজী অফিস, ভূমি অফিস ও বিভিন্ন সরকারী অফিস ব্যাংক কিংবা বীমা কয়রা বাজারে হওয়াতে সব সময় পুরুষ ও মহিলাদের আনা গোনা থাকে বাজারে। বিশেষ করে মহিলা পথচারিদের ভোগান্তিতে পড়তে হয় বেশি ভাগই।সরজমিনে বাজার ঘুরে বাজার ব্যবসায়ী ও ক্রেতা কাছে জানা যায়, এতো বড় ঐতিহ্যবাহী কয়রা বাজারের কোথাও কোন স্থানে কোন সরকারী পাবলিক টয়লেট বা গণশৌচাগার নেই। ফলে নানান দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে পথচারীরা ও ব্যাবসায়ীরা। কেনা কাটা ও বিভিন্ন কাজে আসা মহিলাদের সাথে থাকা শিশুদের মলমুত্র বিভিন্ন স্থানে ফেলানো হয় ।ফলে দুগন্ধের কারণে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরী হয় মাঝে মাঝে। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে বাজারের গলি ও সড়কের পাশে মলমূত্র ত্যাগ করছেন। এর ফলে সৃষ্ট দুর্গন্ধে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। শুধু তাই নয়, পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যও হুমকির মুখে পড়েছে।এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কয়রা ব্যস্ততম বাজারে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে দ্রুত স্বাস্থ্য সম্মত গণশৌচাগার স্থাপনের দাবি সবার।জহুরুল শেখ,আলতাফ , বাইজিদ হোসেন, কাজলসহ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানান, দোকানে আসা কাস্টমার প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে দেখা যাই। প্রয়োজন দেখা দিলে বেশিরভাগ মানুষই স্থানীয় মসজিদের শৌচাগার বা আশপাশের খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করেন। এটা আমাদের কয়রা বাসীর জন্য দুঃখজনক।অটো ভ্যান চালক মহরম বলেন, আমরা কয়রা বাজার কেন্দ্রিক সারাদিন ভ্যান চালাই এর মধ্যে এর মধ্যে যদে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে হয়, তার কোনও জায়গা নেই। ফলে বাধ্য হয়েই আমাদের কোনও বাড়ি বা মসজিদে যেতে হয়। এ ক্ষেত্রে কয়রা বাজারে যদি গণশৌচাগার করে দেয়, তাহলে আমাদের মতো মানষের বড্ড উপকার হয়।বাজার ব্যবসায়ী হাকিম হেলাল উদ্দিন বলেন, হাজার হাজার মানুষের দৈনন্দিন প্রগ্রাব-পায়খানার জন্য কোন গণশৌচাগার নেই। আমার এখানে দিনে অনেক রোগী আসেন বিভিন্ন সময় তারা খবুই প্রস্বাব-পায়খানার জন্য চরম ভোগান্তির শিকার হন।সচেতন মহল জানান, দূর-দূরান্ত থেকে আগত ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার্থে দ্রুততম সময়ে পাবলিক টয়লেট বা গণশৌচাগার নির্মাণ করার জরুরি।কয়রা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল ইসলাম বলেন,গুরুত্বপুর্ন পয়েন্টে গণশৌচাগার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা জায়গা খুজছি তেমন ভাল জায়গা পেলে আমরা গণ শৌচাগার স্থাপন করব।কয়রা বাজার কমিটির সভাপতি সরদার জুলফিকার বলেন,আমরা উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি তারা আমাদের উপযুক্ত জায়গা দেখার কথা বলছেন। এতো দিন আমরা জায়গা পাইনাই বাজারে একজন জায়গা দিতে চেয়েছে। আমরা আশা করছি খুব দ্রুত আমরা কাজ শুরু করতে পারবো।কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম বলেন ,এ ব্যাপারে বাজার কমিটি নেতৃবৃন্দের সাথে আমি কথা বলেছি। বাজারে টয়লেট নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে । আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যেই স্থাস্থ্যসম্মত পাবলিক টয়লেট আমরা দিতে পারবো। তিনি আরও বলেন,কয়রায় পাবলিক টয়লেটের অভাবে মানুষের ভোগান্তির শেষ হবে অচিরেই।