কালিয়ায় খালে কালভার্টের অভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি : কচুরিপানা-শ্যাওলায় পানি পঁচে দূর্গন্ধ

0
735
dav

শেখ মোহাম্মদ আলী, শরণখোলা:
শরণখোলায় রাজৈর থেকে ছোট নলবুনিয়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার কালিয়ার খালে একটি কালভার্টের অভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে খালের দুই পাশের গাছ গাছালির ঝরাপাতা পঁচে দুর্গন্ধ আর বিবর্ণ পানি গিয়ে ঠেকেছে তলানীতে।। যে টুকু পানি আছে তাও আবার ঢেকে আছে কচুরিপানা সহ বিভিন্ন পানা-শ্যাওলায়। এখন পানির হাহাকারে দুর্বিসহ অবস্থা হয়েছে সহস্রাধিক পরিবারের।
গ্রামবাসীরা জানান, শরণখোলা সরকারি কলেজ থেকে বাসস্ট্যান্ডের মাঝ বরাবর কালিয়ার খালের মুখে একটি কালভার্টের অভাবে হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। শত শত একর ফসলি জমি অনাবাদি পড়ে আছে। ধান ওঠার পরে পানির অভাবে সেখানে অন্য কোনো ফসল ফলাতে পারছেনা কৃষকরা। একটি কালভার্ট নির্মান করে রায়েন্দা খালের সঙ্গে সংযোগ করে দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এমন দাবিতে রাজৈর, পশ্চিম রাজৈর ও ছোট নলবুনিয়া এই তিন গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মহলে ধর্ণা দিলেও কোনো ফল হয়নি। যার ফলে পানি বাহিত নানা রোগ ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
গৃহিনী হাজেরা বেগম (৫০) ও গৃহবধু মিস্টি আক্তার (৩০) বলেন, পানির রং গাবের কষের মতো হয়ে গেছে। এমন দুর্গন্ধ পানি দিয়ে গোসল করা যায়না। থালা-বাসন, জামা-কাপড় ধোয়া এমন কি আমরা স্বাভাবিক কাজকর্ম ও করতে পারছিনা। গোসল করার পর গা চুলকায়। ছেলে মেয়েদের শরীরে খুজলি-পাচড়া দেখা দিয়েছে।
ভুক্তভোগী গ্রামবাসীর মধ্যে মো. আমজাদ হাওলাদার (৮০), মকবুল হাওলদার (৭৫), আব্দুর রহিম মল্লিক (৪৫), মুজিবর হাওলাদার (৫০), দেলোয়ার হাওলাদার (৪৫), হাসিব বিল্লাহ (৩৫) বলেন, খালের পানি পেঁচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। মুখে নেওয়াতো দুরে থাক পায়খানায়ও এ পানি ব্যবহার করা যায়না।
রাজৈর গ্রামের চাষী মো. লোকমান মোল্লা (৫৫) ও সাইয়েদ আলী হাওলাদার (৬০) বলেন, রাজৈর গ্রামের কয়েকশ একর জমি আমন ধান ওঠার পরে ফাঁকা পড়ে থাকে। কালিয়ার খাল সচল থাকলে এ সব জমিতে ইরি ও বোরো ধান সহ সারা বছরই বিভিন্ন ফসল ফলানো সম্ভব হতো। পানি সমস্যার কারণে জমি থাকলেও চাষীদের বেকার বসে থাকতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন বলেন, খালের পানি কোথাও সরতে না পারায় গাছের পাতা পঁচে, শ্যাওলা জমে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। এতে গ্রামের মানুষ চরম কষ্ট ভোগ করছে। আপাতত খালের মুখে আমার ব্যক্তিগত খরচে পাইপ বসিয়ে জোয়ারের পানি ওঠা নামার ব্যবস্থা করা হবে। স্থায়ীভাবে সমস্যা সমাধানে পরবর্তীতে ওখানে একটি কালভার্ট করারও চেষ্টা চলছে। খালটি সচল হলে একদিকে যেমন পানির সমস্যা দুর হবে, অন্যদিকে এলাকায় কৃষির বিপ্লব ঘঠানো সম্ভব হবে।