কপিলমুনি আনসার ও ভিডিপি ক্লাবটির বেহাল দশা:দেখার যেন কেউ নেই

0
523

শেখ নাদীর শাহ্,কপিলমুনি::

পাইকগাছার কপিলমুনির আনসার ও ভিডিপি ক্লাবটি দীর্ঘদিন যাবৎঅনাদরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে ।বর্তমানে কোন কার্যকরী কমিটি না থাকায় এর দেখভাল করে চলেছেন প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতির তৃতীয় পুত্র পত্রিকা পরিবশেক (হকার) মোমিন গাইন। তার পিতার স্মৃতি টুকু আগলে রাখার তাগিদে ক্লাবটিকে বাঁচাতে সাহায্যের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পালাক্রমে সরকারের পটপরিবর্তন হলেও কোন উন্নতির ছোঁয়া লাগেনি এ প্রতিষ্ঠানটিতে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে ১৯৯২ সালে এর পদযাত্রা শুরু হয়েছিল। শুরু থেকে কপিলমুনির একটি জনগরুত্বপূর্ন স্থানে নিজস্ব জায়গায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় দেশ যখন সার্বিকদিক দিয়ে এগিয়ে চলেছে ঠিক সেই মূহুর্তে এখনও অযত্নে জরাজীর্ণবস্তায় পড়ে রয়েছে আনসার ও ভিডিপি ক্লাবটি।

প্রতিবেদনকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়,কপিলমুনির মহামানব রায় সাহেব প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনি বাজারের পুলিশ ফাঁড়ি জামে মসজিদ ও কপিলমুনি প্রেসক্লাব সংলগ্ন ১নং হরিঢালী ও ২নং কপিলমুনি ইউনিয়ন শাখার তদস্থলে ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল। তৎকালীন সময় থেকে কপিলমুনির হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হাবিবুর রহমান গাইন এর একান্ত প্রচেষ্ঠায় পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি আনসার ও ভিডিপি ক্লাবটির সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল। ২০০৩ সালে হাবিবুর রহমান মৃত্যু বরণ করলে একপর্য়ায় ক্লাবটির কার্যক্রয়ে কিছুটা ভাটা পড়ে।

এদিকে প্রাচীনকালে নির্মিত প্রাচীরের মূল ফটক দিয়ে ভিতরে ঢুকতেই দেখাযায়, ইটের গাঁথুনি দেওয়া একচালা বিশিষ্ট টিনের ছাউনি দুটি কক্ষ, কক্ষের ভিতরের অংশ মাটির সাথে সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ছাউনিকৃত টিনগুলি মরিচা পড়ে জালের মত ছিদ্র হয়ে গিয়েছে। ক্লাবটির চারপাশ জুড়ে ময়লা আবর্জনার স্তুপে পরিণত হয়েছে।তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে পুরো ক্লাবঘরসহ পুরো জায়গা পানিতে নিন্মজিত থাকে।

কথা হয় বারান্দার অঙ্গিনায় মাটি ও বালু দিয়ে ইট বিছিয়ে সেলাই মেশিন বসিয়ে দর্জির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ কারী আনসার ভিডিপির সদস্য আফাজ মোড়লের সাথে।ক্লাবটির ভগ্নদশা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুপ্রাচীন কালে নির্মিত টিন সেডের ঘরটি অনেক আগে থেকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আমি জীবন যুদ্ধে জীবিকার তাগিদে এখানে পায়ে চালিত সেলাই মেশিন বসিয়ে এলাকার পরিচিত দু’এক জনের জামা প্যান্টের কাজ করে থাকি। তাতে করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন রকমে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি।ইতিপূর্বে এলাকার অনেক জনপ্রতিনিধিসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিরা আমাদের ক্লাবটি পরিদর্শন করে বরাদ্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তীতে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি বরং প্রতিশ্রুতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।ভাঙ্গাস্বরে তিনি আরও বলেন সরকারীভাবে প্রতিষ্ঠানটি বাঁচাতে কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা দেখছেন।

সর্বোশেষ এব্যাপারে কথাহয় প্রতিষ্ঠাতার তৃতীয় পুত্র কপিলমুনির দীর্ঘদিনের পত্রিকা পরিবেশক হতদরিদ্র মমিন গাইনের সাথে।আলাপকালে তার পিতার প্রতিষ্ঠিত আনসার ও ভিডিপি ক্লাব সম্পর্কে কথা বলতেই তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন।নিত্যদিনের সাথী পত্রিকা গুলি হাত থেকে রেখে দিয়ে পত্রিকাবাহী একটি ব্যাগ থেকে বের করেন তার পিতার আনসারী পোশাক পরিহিত একটি দূর্লভ ছবি। বিবরণ জানতে তিনি ব্যক্ত করেন আনসার ভিডিপি ক্লাব সম্পর্কিত জীবন সূত্রে গাথা কাহীনি।

সর্বশেষ মমিন গাইন ও এলাকার সচেতন মহল ক্লাবটির বর্তমান পরিবেশ থেকে উন্নতির লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের আস্থাভাজন পাইকগাছা-কয়রার উন্নয়নের কারিগর ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের অহংকার মাননীয় সাংসদ আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু’র সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।