খেলা ডেস্ক, খুলনা টাইমস:
বোকা জুনিয়র্সের সমর্থকদের চোখে পানি চলে এল কথাটি শুনে। ‘আমি কখনোই যাইনি’, চায়নিজ সুপার লিগে এক বছর কাটিয়ে আবার প্রিয় দলের ডেরায় ফিরেছেন কার্লোস তেভেজ। এমন আকাঙ্কিত পুনর্মিলনীতে আবেগে থর থর এমন বাক্যই তো কানে সুধা ঢালে। কিন্তু এমন কথাই গায়ে জ্বালা বাড়িয়ে দিতে বাধ্য সাংহাই শেনহুয়াদের গায়ে। তেভেজের প্রতিটি গোলের জন্য যে তাদের খরচ হয়েছে ১ কোটি ডলার!
একটু পেছনে ফিরে দেখা যাক। ২০১৭ সালে বিশ্ব ফুটবলকে নাড়িয়ে দিয়েছিল শেনহুয়া। তেভেজকে বোকা থেকে দুই বছরের জন্য টেনে নিয়েছিল চীনের দলটি। বেতন শুনে মেসি-রোনালদোদেরও ঈর্ষা জাগতে বাধ্য। তখন বার্ষিক ২০ মিলিয়ন ইউরোর একটু বেশি বেতন পেতেন দুজন। সেখানে তেভেজ কিনা চীনের কোন এক অখ্যাত লিগে খেলেই কিনা ৪০ মিলিয়ন ডলার কামাবেন তেভেজ! দুই বছরে সেটা ৮০ মিলিয়ন! চীনের আশা, তেভেজের ছোঁয়ায় বদলে যাবে দেশের ফুটবল, আর তেভেজের প্রাপ্তি তো বুঝতেই পারছেন।
গল্পটা সেভাবে এগোয়নি। চিনে যাওয়ার পর থেকেই সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে সংবাদ শিরোনাম হতে লাগলেন। কখনো বাজে পারফরম্যান্স, কখনো সন্দেহজনক চোট, কখনো বা বুয়েনেস এইরেসে গলফ খেলতে যাওয়া। এভাবেই পুরো বছরে মাত্র ২০টি ম্যাচ খেললেন তেভেজ। তাঁর দল শেনহুয়া চায়নিজ সুপার লিগে ১১তম হয়েছে। এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগের বাছাইপর্বে যাওয়ার স্বপ্নটাও শেষ হয়েছে। ব্যর্থ এক বছর কাটিয়ে তেভেজ তাই আবার ফিরেছেন আর্জেন্টিনায়। ডিয়েগো ম্যারাডোনার চোখে এটা দারুণ এক আর্থিক প্রজেক্ট ছিল, ‘সে গেল, সান্তার ব্যাগ ডলার দিয়ে পুরল এবং বোকায় ফিরে এল। দারুণ ছিল!’
এক বছরে যে ২০টি ম্যাচ খেলেছেন, তাতে মাত্র ৪ গোল তেভেজের। এই ৪ গোল দিয়ে না পেরেছেন দলকে কিছু জেতাতে, না পেরেছেন সমর্থনদের খুশি করতে। ৪০ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে এমন পারফরম্যান্স কেই-বা আশা করে। ম্যাচপ্রতি তেভেজের পেছনে ২ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে দলটির। আর গোলের হিসাব নিলে ১০ মিলিয়ন ডলার! চার দশে চল্লিশ!
১ কোটি ডলারের বিনিময়ে এক এক গোল! বাংলাদেশি অর্থে ৮২ কোটি টাকা! মেসি-রোনালদো যদি এই দরে গোল করতেন, তবে তো বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদকে দেউলিয়া ঘোষণা করতে হতো। প্রথম আলো।