ইতিহাস সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-২০তে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

0
443

খুলনাটাইমস ডেস্ক : ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশ তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০ আগামীকাল বৃহস্পতিবার স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে। রাজকোটের সৌরাস্ট্র ক্রিকেট এসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। একট জয় কেবলমাত্র একটি সিরিজ জয়ই নিশ্চিত করবে না, সেই জয়ের মাত্রা হবে আরো অনেক বড় কিছু। টানা দ্বিতীয় এ ম্যাচে ভারতকে হারাতে পারলে বাংলাদেশ দলের সিরিজ জয়তো নিশ্চিত হবেই। পাশাপাশি দেশের বাইরে ভারতের বিপক্ষে ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মত দ্বিপাক্ষিক তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়বে বাংলাদেশ। তবে টাইগাররা ইতিহাসের চিন্তা করে চাপে না থেকে বরং নতুন আরেকটি ম্যাচ বিবেচনা করেই মাঠে নামবে এবং প্রথম ম্যাচে ভারতকে সাত উইকেটে পরাজিত করার মোমেন্টাম নিয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বিপক্ষে খেলোয়াড়দের ধর্মঘট এবং আইসিসি কর্তৃক সেরা তারকা সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞার পর দেশের ক্রিকেটে যখন টালমাটাল অবস্থা এমন অবস্থার মধ্যেই ভারতের বিপক্ষে সংক্ষিপ্ত ভার্সনের প্রথম জয় পেয়েছে দলটি। শক্তিশালী পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের বিপক্ষে একটি জয় কেউই চিন্তা করতে পারেনি। সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে টি-২০ ক্রিকেটে ভারতের বিপক্ষে আট ম্যাচ পরাজয়ের বৃত্ত ভেঙ্গে জয় ছিনিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। তবে টাইগারদের আত্মবিশ্বাসের জায়গাটি হচ্ছে প্রথম ম্যাচে দলের সমন্বিত ও দুর্দান্ত পারফরমেন্স। প্রথম ম্যাচে দলের জয়ে মহাগুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন সিনিয়র খেলোয়াড়র মুশফিকুর রহিম এবং তাকে যথার্থ সহযোগিতা করেছেন মোহাম্মদ নাঈম, আফিফ হোসেন এবং আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের মত তরুণ খেলোয়াড়রা। টাইগার ভক্তদের মুখে হাসি ফোটাতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছেন সৌম্য সরকারও। দ্বিতীয় ম্যাচের আগে এ সকল কিছুই তাদেরকে এতটাই আত্মবিশ্বাসী করেছে যে জয় ছাড়া তারা অন্য কিছু ভাবতে রাজি নয়। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে আজ বুধবার বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘সিরিজ জয়ে এটাই আমাদের সেরা সুযোগ।’ সাকিবের পরিবর্তে টি-২০ দলের নেতৃত্ব পাওয়া রিয়াদ আরো বলেন, ‘ছেলেরা প্রথম ম্যাচে দারুণ পারফরমেন্স দেখিয়েছে এবং সেভাবেই ম্যাচ জিতেছে। একই পারফরমেন্স ধরে রাখতে পারলে আশা করছি সিরিজ জয় সম্ভব।’ বাংলাদেশ দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীর নান্নুর কথাতেও ঝড়লো আত্মবিশ্বাস। তিনি বলেন, ছেলেরা আবারো তাদের সেরাটা দিতে পারলে সিরিজ জয়ের ভাল সম্ভাবনা আছে। তিনি বলেন,‘ভারতের মাটিতে তাদের বিপক্ষে জয় পাওয়া অনেক বড় একটি অর্জন। তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে ভারত খুবই অভিজ্ঞ একটি টি-২০ দল। আবারো বলছি আমাদের ছেলেরা যদি তাদের সেরাটা দিতে পারে তবে ভাল একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।’ নিজ মাটিতে ভারত কখনো দ্বিপাক্ষিক তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ হারেনি। সে রেকর্ড ধরে রাখতে হলে রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন দলটিকে রাজকোটে পারফরমেন্সে অনেক উন্নতি ঘটাতে হবে। নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলির অনুপস্থিতিতে ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দেয়া রোহিত শর্মা পাকিস্তানের শোয়েব মালিকের পর দ্বিতীয় খেলোযাড় হিসেবে টি-২০ ভার্সনে শততম ম্যাচ খেলতে নামছেন। যে কারণেই ম্যাচটিকে শুধুমাত্র স্মরণীয় নয় একই সাথে সিরিজে টিকে থাকতে মরিয়া রোহিত। তিনি বলেন,‘ ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নিতে হবে। আশা করছি আমরা আমরা সিরিজে ঘুড়ে দাঁড়াবো।’ প্রথম ম্যাচে এমন জয়ের পর শেষ মুহূর্তে কোন প্রকার ইনজুরি দেখা না দিলে সেরা একাদশে কোন পরিবর্তন আনা হবেনা বলে ইঙ্গিত দিলেন প্রধান নির্বাচক নান্নু। ব্যাটিং সহায়ক রাজকোটের উইকেটে বড় স্কোর হবে ধারনা করা হলেও দ্বিমত পোষন করেন বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। স্টেডিয়ামের আকার অনুসারে ১৭০ রানই যথেষ্ঠ হবে উল্লেখ করে ডোমিঙ্গো আরো বলেন দুইশ রানের বেশি হওয়ার মত পিচ এটা নয়। এছাড়া কিছু পরিসংখ্যানও টাইগার খেলোযাড়দের পক্ষে আছে যা ভারতকে হারাতে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। টি-২০ ক্রিকেটে ৫০টি ছক্কা পূরণ করতে বাংলাদেশ অধিনায়ক রিয়াদকে আর মাত্র দু’টি ওভার বাউন্ডারি হাকাতে হবে। তাহলে টি-২০ ক্রিকেটে ৫০টি ছক্কা হাকানো প্রথম ক্রিকেটার হবেন তিনি। এছাড়া টি-২০ ক্রিকেটে এক হাজার রান ক্লাবের সদস্য হতে মোসাদ্দেক হোসেনকে আর মাত্র ৫৩ রান করতে হবে।
বাংলাদেশ দল : মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), লিটন দাস, তাইজুল ইসলাম, সৌম্য সরকার, আমিনুল ইসলাম, আরাফাত সানি, মোহাম্মদ নাঈম, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, আল-আমিন হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, আবু হায়দার রনি ও মোহাম্মদ মিঠুন।
ভারত দল : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শিখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, সঞ্জু স্যামসন, শ্রেয়াস আইয়ার, মনিষ পান্ডিয়া, ঋসভ পান্থ, ওয়াশিংটন সুন্দর, ক্রুনাল পান্ডিয়া, যুজবেন্দ্রা চাহাল, রাহুল চাহার, দিপক চাহার, খলিল আহমেদ, শিবম দুবে ও শারদুল ঠাকুর।