আত্মবিশ্বাস বাড়ায় সেলফ ডিফেন্স

0
279

খুলনাটাইমস লাইফস্টাইল ডেস্ক: অন্তঃপুরবাসিনীদের যুগ নয় এখন। পড়াশোনা থেকে শুরু করে নানা কারণে বিভিন্ন স্থানে যেতে হয় আজকের নারীকে। চলার পথে আত্মরক্ষার কৌশলটি জানা থাকলে নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। খালি হাতে আত্মরক্ষার কৌশল হিসেবে ‘কারাতে’ অনন্য। একবার এর কৌশলগুলো রপ্ত হলে জীবনভর প্রয়োজনের মুহূর্তে কাজে আসে। তাছাড়া নিয়মিত কারাতে চর্চা করলে শরীরটাও থাকে মেদহীন, চটপটে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ মহানগরগুলোর অনেক নারীই এখন কারাতে শিখছেন। এ নিয়ে কথা হলো বাংলাদেশ ইয়াং তায়কোয়ান্দো একাডেমির কারাতে প্রশিক্ষক শংকর কুমার রায়ের সঙ্গে।

তিনি জানান, কারাতে স্কুলগুলোয় এখন মেয়েদের সংখ্যা বাড়ছে। স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা তো বটেই, কর্মজীবী নারীরাও এখন আত্মরক্ষার কায়দাকানুন শিখতে আগ্রহী। তবে কারাতে শিখতে হলে শরীর ফিট রাখা জরুরি, সেই সঙ্গে জানতে হবে আত্মরক্ষার কৌশলও। পৃথিবীতে মানুষের জানা প্রাচীন কৌশলই হলো এ আত্মরক্ষার কৌশল বা ‘আর্ট অব সেলফ ডিফেন্স’। স্কুলগামী মেয়েদের যেমন, তেমনি কর্মজীবী নারীদের জন্যও এটি বিশেষভাবে দরকার। আত্মরক্ষার কলাকৌশল জানা থাকলে যে কোনো সময় কাজে লাগাতে পারে তারা।

নিজেকে রক্ষার পাশাপাশি শরীর গঠনেও ভূমিকা রাখছে এ প্রশিক্ষণ। বিভিন্ন বেল্ট অনুযায়ী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে ছেলেমেয়েরা। বেল্টগুলো হলো হোয়াইট, ইয়েলো, ইয়েলো-গ্রিন, গ্রিন-ব্লিউ, ব্লিউ-রেড, রেড-ব্ল্যাক ও ব্ল্যাক বেল্ট। মোটামুটিভাবে আট থেকে নয়টি ধাপ পেরোনোর পর ব্ল্যাক বেল্ট পেতে হয়। তবে বাস্তব বিষয়গুলো বিবেচনা করে আত্মরক্ষার প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে কিছু বিষয় জানা দরকার। সেগুলো হলো যথাযথ সতর্কতা, অপরাধীদের চিন্তার ধরন সম্পর্কে ধারণা, ব্যক্তিগত নিরাপত্তাবিষয়ক তথ্য এবং অত্যাবশ্যক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সহজ কিছু ব্যবহারিক কলাকৌশল।

কারাতে প্রশিক্ষণের প্রথম ধাপ ফিটনেস ট্রেনিং। শরীর কতটা নমনীয়, তা দেখেই প্রশিক্ষক নির্ধারণ করেন ঠিক কোথা থেকে প্রশিক্ষণ শুরু হবে। ভারী খাবার খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর ফিটনেস প্র্যাকটিস শুরু হয়। ফিটনেস ট্রেনিংয়ের সুবিধা হলো দিন দিন আপনার শরীরের জয়েন্টগুলো নমনীয় হয়ে যাবে। এর পর প্রশিক্ষক কিকিং, পাঞ্চিং, ত্যাগু, ব্লকিং ও হ্যান্ডব্লকিংয়ের মতো বিভিন্ন ধাপ শেখান শিক্ষার্থীকে।

আসুন জেনে নেই কিকিং ও পাঞ্চিং কী। কখনো আক্রান্ত হলে এ কৌশলের মাধ্যমে হাতের মধ্যমা দিয়ে আঘাত করবেন শত্রুর খুব নরম ও দুর্বল জায়গায়। যেহেতু আপনার হাত ও পা ফিটনেসের কারণে নমনীয় অবস্থায় থাকে, তাই জোরে আঘাত হবে না। চাইলে কনুই দিয়েও মারতে পারেন। এ কৌশলের মধ্য দিয়ে শেখানো হয় পায়ের আঙুলের নিচের মাংসল জায়গা, পায়ের ওপরের অংশ এবং গোড়ালি দিয়েও কীভাবে কিক করা যায়। এবার বলব ত্যাগু সম্পর্কে। কিক, পাঞ্চ, ব্লকÑ এ তিন ধাপের সমন্বয়ে হয় ত্যাগু। আর ব্লকিং ও হ্যান্ডব্লকিংয়ের মধ্য দিয়ে দুই হাত ব্যবহার করে শরীরের তিন ভাগ এলাকাকে রক্ষা করা যায়। প্রথম ভাগ মাথা ও মুখ, দ্বিতীয় ভাগ বুক ও পেট, তৃতীয় ভাগ তলপেট ও অ-কোষ। এসব প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে অনায়াসেই একজন মেয়ে নিজেকে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন শংকর কুমার রায়। রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল যেমন স্কলাসটিকা স্কুল, ভিকারুননিসা নূন স্কুল, ইন্টারন্যাশনাল টার্কিশ হোপ স্কুল, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকাসহ (আইএসডি) বিভিন্ন স্কুলে আজকাল কারাতে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় বলে তিনি জানান।