অর্থের জন্য কারো পড়াশোনা বন্ধ হতে দেয়া যাবেনা- সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন

0
786

সজল সরকার, গোপালগঞ্জঃ

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, অর্থের অভাবে কারো পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে, এটা হতে দেয়া যাবে না, দারিদ্রমুক্ত, উন্নত, মর্যাদাশীল একটি দেশ- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন। এজন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ অত্যন্ত প্রয়োজন। উপযুক্ত শিক্ষা একজন নারীকে আত্মপ্রত্যয়ী করে তুলতে পারে, যোগ্য জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট ঘোষনা, টাকার জন্য কারো শিক্ষা বন্ধ হতে পারেনা, তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট গঠন করেছেন।

বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিসের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট এর উদ্যোগে “নারী শিক্ষা অব্যাহত ও নারীকে আত্মপ্রত্যয়ী করে তোলার বিষয়ে করণীয়” শীর্ষক কর্মশালায় একথা বলেন তিনি।

কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আপনারা এই কাজে অর্থ দিয়ে হোক কিংবা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে পারেন, যদি কারো কাছে খবর থাকে, একজন শিক্ষার্থী টাকার অভাবে তার লেখাপড়া বন্ধ করে দিচ্ছে, তাহলে সাথে সাথে ট্রাস্টের মেসেজটি তাকে দিয়ে দিন, ট্রাস্ট তার পাশে দাড়াবে, মোট কথা, অর্থের জন্য কারো পড়াশুনা বন্ধ হতে দেয়া যাবেনা।

গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এবিএম জাকির হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।
বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজমীরা খানমের সঞ্চালনায় প্রাণবন্ত এ কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাদিকুর রহমান খান সহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত সহকারী কমিশনারগণ, জেলা ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারন সম্পাদক, শিক্ষক প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্টিং মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।
“নারী শিক্ষা অব্যাহত ও নারীকে আত্মপ্রত্যয়ী করে তোলার বিষয়ে করণীয়” শীর্ষক কর্মশালার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা শিক্ষা অফিসার শেখ আকরাম হোসেন।
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট এর পরিচিতি ও প্রেক্ষাপট উপস্থাপন করেন ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক (সহযোগী অধাপক) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন সোহাগ।

এসময় বিশেষ অতিথি, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এবিএম জাকির হোসাইন ট্রাস্টের বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগ এই ট্রাস্ট গঠন, ২০১২ সাল থেকে কাজ করে আসছে এই ট্রাস্ট। নারী শিক্ষা বন্ধ হয়ে যাক কিংবা নারী পরনির্ভরতায় বাঁচুক, এটা তিনি চান না, টাকার অভাবে নারী শিক্ষা যাতে বন্ধ হয়ে না যায়, প্রতিটি নারী যাতে আত্ননির্ভর হতে পারে, নিজে কিছু করতে পারে- এমন প্রত্যয়ে যেন প্রতিটি নারী প্রত্যয়ী হতে পারে, এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গঠন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট।
কর্মশালার সভাপতি গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার বলেন, গোপালগঞ্জ ফাউন্ডেশন নামে একটি ফান্ড আছে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে, ফান্ডের আর্থিক অবস্থা খুব ভালো নয়, তারপরেও দরিদ্র, কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা দেয়া হয় এই ফান্ড থেকে, অর্থের অভাবে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে, এমন তথ্য জেলা প্রশাসককে জানানোর পর কেউ খালি হাতে ফেরেনি এখান থেকে। তিনি তাঁর বক্তব্যে বরিশাল মেডিকেল কলেজে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে গোপালগঞ্জ ফাউন্ডেশন থেকে দেয়া ২০ হাজার টাকা শিক্ষা সহায়তার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, গোপালগঞ্জ শিল্পভিত্তিক জেলা নয়, সকলের আয় রোজগারও সীমিত, তা সত্বেও তিনি গোপালগঞ্জ ফাউন্ডেশন ফান্ডে সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করার জন্য উপস্থিত সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদেরকে ৬টি দলে ভাগ করে নারী শিক্ষার প্রতিবন্ধকতাসমূহ কী কী?, নারী শিক্ষা অব্যাহত রাখতে স্থানীয়ভাবে কী কী করণীয়?, নারী শিক্ষা অব্যাহত রাখতে সরকারের আরো কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন?, নারীকে আত্নপ্রত্যয়ী করে তুলতে বাধাগুলো কী কী?, নারীকে আত্নপ্রত্যয়ী করে তুলতে স্থানীয় পর্যায়ে কী কী করণীয়? এবং নারীকে আত্নপ্রত্যয়ী করে তুলতে সরকারের আরো কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন? সম্বলিত ৬টি বিষয়ের উপরে দলীয় কাজ দেয়া হয়। দলীয় কাজ শেষে প্রতিটি দল থেকে ভিন্ন ভিন্ন গঠনমূলক মতামত উপস্থাপিত হয়।