স্বাস্থ্য খাতের এই দশা কাম্য নয়

0
372

স্বাস্থ্য খাতে নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার কারণে বিভিন্ন প্রকল্পে স্থবির দশা দেখা দিয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে এই দশা আরো প্রকট হয়েছে। স্বাস্থ্য খাত কতটা নাজুক তা করোনা আক্রান্ত রোগীদের অভিজ্ঞতা থেকে স্পষ্ট। অনেক জেলা শহরে সরকারি হাসপাতাল আছে বটে; কিন্তু সেখানে আইসিইউ নেই, ভেন্টিলেটর নেই; করোনা পরীক্ষার পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা নেই; পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও টেকনোলজিস্ট নেই। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় বর্তমানে দেশে ১৭টি প্রকল্প চালু রয়েছে। প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগ হাসপাতাল নির্মাণ সংক্রান্ত। ১৭টি প্রকল্পের বেশির ভাগের কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয়নি। ফলে প্রকল্পের সময় ও ব্যয়Ñদুটিই বেড়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় সাধারণ মানুষ এসবের সুফল পাচ্ছে না।
একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। রাজধানীর শেরেবাংলানগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারে করোনা আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রাজশাহী বিভাগের আটটি ও সিলেট বিভাগের তিনটি জেলা এবং শেরেবাংলানগরের আশপাশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে কভিড-১৯ আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় ওই রেফারেল সেন্টারে। কাজটি করতে সেখানে কর্মরত আছেন মাত্র ১১ জন চিকিৎসক এবং ১০ জন টেকনোলজিস্ট। অথচ করোনা পরীক্ষা করতে দরকার ২০০ থেকে ২৫০ জন টেকনোলজিস্ট ও চিকিৎসক। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় এ কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। জানা যায়, চার বছর ধরে ওই সেন্টারের জন্য জনবল নিয়োগের প্রস্তাব ঘুরপাক খাচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় করোনা পরীক্ষার ফল দিতে বিলম্ব ঘটছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, যে পরিমাণ জনবল চাওয়া হয়েছে তা পাওয়া গেলে চলমান মানবিক বিপর্যয়ে সুফল পাওয়া যেত। অন্যদিকে চার দফায় মেয়াদ বাড়িয়েও এই সেন্টার বিষয়ক প্রকল্পের কাজ শেষ করা যায়নি। ফলে প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে। সেন্টারের কার্যক্রমও পুরো চালু করা সম্ভব হয়নি।
স্বাস্থ্য খাতের এমন অনেক প্রকল্প নানা সমস্যায় ভুগছে। কর্মব্যবস্থাপনায় দক্ষতার অভাব রয়েছে। আছে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা। এমন অবস্থায় একটি দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ পড়ে থাকলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াতে পারে তা অনুমেয়। আমরা আশা করি, এ সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট বিভাগ তৎপর হবে।