সুন্দরবনে হরিণ শিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে উল্টো বনরক্ষীরাই পাল্টা মামলার আসামী

0
499

শেখ মোহাম্মদ আলী, শরণখোলা:
পূূর্ব সুন্দরবনে হরিণ শিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে উল্টো বনরক্ষীরাই পাল্টা মামলার আসামী হয়েছে। আসামী শিকারীচক্র মামলা থেকে রেহাই পেতে ঘটনার তিন মাস পরে মামলার বাদীসহ ৩ বনরক্ষীর বিরুদ্ধে শরণখোলা থানায় একটি পাল্টা মামলা দায়ের করেছে। ঘটনায় বন বিভাগে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) এনামুল হক জানান, শরণখোলা থানায় হরিণ শিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করায় মামলার আসামীরা ঘটনার সাড়ে তিনমাস পরে আসামিদের মামা পরিচয়দানকারী মোংলা উপজেলার মিঠাখালী গ্রামের সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বনবিভাগের মামলার বাদী তাম্বলবুনিয়া টহল ফাঁড়ির ওসি মিজানুর রহমানসহ বিএম আবুল বাশার ও মোতালেব হোসেনকে আসামী করে বনরক্ষীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে গত ১ মে শরণখোলা থানায় একটি পাল্টা মামলা দায়ের করেছেন।
চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারী বিকেল ৫ টার দিকে সুন্দরবনের তাম্বুলবুনিয়া টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীরা টহলকালে বনের কলামুলা এলাকায় দুইটি ডিঙ্গি নৌকা আটক করে। পরে তারা নৌকা দুইটি তল্লাশি চালিয়ে হরিণ শিকারের ফাঁদ, শিকার নিষিদ্ধ মা কাকড়া ও মাছ ধরার সরঞ্জাম উদ্ধার করে। এ সময় নৌকায় থাকা শিকারীরা আকষ্মিক ভাবে বনরক্ষীদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে মারধর করে পালিয়ে যায়। শিকারীদের হামলায় বনরক্ষী আবুল বাশার ও মোতালেব হোসেন গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় ১৭ জানুয়ারী তাম্বুলবুনিয়া টহলফাড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে শরণখোলা থানায় চারজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন বলে এসিএফ জানান। আসামীরা হচ্ছেন, পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার ধাবড়ী গ্রামের আঃ হক শেখের পুত্র ইউসুফ শেখ (৩৫), বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের হাছেন মুসুল্লির পুত্র আঃ হামিদ মুসুল্লি (৩৫), হানিফ মুসুল্লি (৩৩), আসাদ মুসুল্লি (৩০)। এ মামলায় ইতিমধ্যে আদালতে চার্জশীট দেয়া হয়েছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শরণখোলা থানার এসআই স্বপন কুমার জানিয়েছেন।
শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেন, ওই আসামীরা মেডিকেল সনদপত্র নিয়ে এসে মারপিটের অভিযোগ দেয়ায় মামলা নেয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে ঘটনার সত্যতা পাওয়া না গেলে আদালতে চুড়ান্ত রিপোর্ট দেয়া হবে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ বেলায়েত হোসেন বলেন, হরিণ শিকারীরা তাদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা থেকে রেহাই পেতে অসৎ উদ্দেশ্যে বনরক্ষীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে বনবিভাগের মনোবল দুর্বল করতে চাইছে। তাদের অপচেষ্টা সফল হবেনা বরং উক্ত আসামীরা আদালতে শাস্তি পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।