প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার’নামে হচ্ছে খুলনার মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

0
1960

নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনায় প্রস্তাবিত মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে করার অনুমতি মিলেছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর (রবিবার) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৩ মুহাম্মদ শাহীন ইমরান স্বাক্ষরিত ০৩.০০.০০০০.০৭০.৯৯.০০১.১৮ নং স্মারকে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রেরিত এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
উক্ত পত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘গত ১৯/০৮/২০১৯ ইং তারিখে খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে প্রেরিত ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.০১০.২৩.১৯.৭১৮ নং স্মারকের পরিপ্রেক্ষিতে খুলনা জেলায় ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনের প্রস্তাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।’
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০১৯ এ খুলনা জেলার উন্নয়ন, বিভিন্ন সামাজিক অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিকট একাধিক প্রস্তাব নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। এরই মধ্যে অন্যতম একটি প্রস্তাব ছিল খুলনা শহরে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা। একই সাথে উক্ত মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টি বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের স্মৃতি লালি খুলনা জেলায় তারই পরিবারের সদস্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর নামে করার জন্য জেলা প্রশাসক অনুরোধ জানান।
সূত্রটি আরও জানায়, খুলনায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিষয়টি গত জুলাই মাসে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় উপস্থাপন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। সভায় আলোচনা করে রেজুলেশনে অন্তর্ভুক্ত করেন এবং বিষয়টি নিয়ে সিটি মেয়র তালকদার আব্দুল খালেক ও সংসদ সদস্য সেখ সালাউদ্দিন জুয়েলের সাথে আলোচনার পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি প্রেরণ করেন। যার পরিপ্রেক্ষিত গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রেরিত পত্রের মাধ্যমে খুলনা জেলায় ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপন করার অনুমতি প্রদান করা হয়।
পত্রে আরও জানানো হয়, ‘খুলনা সিটি কর্পোরেশনের স¤প্রসারিত এলাকার মধ্যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রায় ১০০ একর জমির সংস্থান আছে বলে জেলা প্রশাসক, খুলনা প্রস্তাবে উল্লেখ করেছেন। বর্ণিতাবস্থায়, খুলনা জেলায় ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হ’ল।’
এদিকে খুলনায় ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনের অনুমতি প্রদান করা হয় জেলা প্রশাসন, রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ এবং খুলনার সর্বস্তরের মানুষের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মহৎ এ উদ্যোগে খুলনাবাসী আনন্দিত, অভিভুত। খুলনাবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। একই সাথে খুলনার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর প্রতিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশ (বিএমএ) খুলনা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মোঃ মেহেদী নেওয়াজ বলেন, ‘এর মধ্যদিয়ে বিএমএ, স্বাচিপসহ খুলনাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। চিকিৎসার মান অনেক গুণে বৃদ্ধি পাবে। বিভাগীয় শহরে গবেষণামূলক চিকিৎসা পদ্ধতি চাল হবে। এসএম, এমফিল, এমবি প্রভৃতি কোর্স চাল হবে। এদতাঞ্চলে মেডিকেলে আধুনিক শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
প্রসঙ্গত, খুলনা বিভাগীয় শহর ও তৃতীয় বৃহত্তম নগরী। উপকূলীয় জেলা হওয়ায় এখানের জনগনকে প্রতিনিয়তই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে বসবাস করতে হয়। প্রতি বছরই এখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানে। সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জনগণের চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্য সেবা পর্যাপ্ত নয়। উন্নত চিকিৎসার অভাবে রোগীদের ঢাকা এবং বিদেশে যেতে হয়। অসহায় দরিদ্র্য রোগী প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে উন্নত চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করে। খুলনায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে এতদাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা মেডিকেলে আধুনিক শিক্ষার সুযোগ পাবে এবং এটি হবে দেশের চতুর্থ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।