চালনা পৌরসভার সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার

0
800

আজিজুর রহমান, খুলনাটাইমস :
খুলনার চালনা পৌরসভার কৃষ্ণ চৌকিদার বাড়ি-খিষ্টান পাড়ার সড়ক পাকা করার কাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসি রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেন এবং নিম্নমানের ইটগুলো তুলে টেকসই সামগ্রী ব্যবহার করে সঠিক নিয়মে সড়ক নির্মাণের দাবি জানায়। এর পরও ঠিকাদার নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ করছেন বলে জানান এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, পৌরসভার বৌমার গাছতলা মাছ বাজার থেকে পশ্চিম দিকে একটি রাস্তা বেরিয়ে খলিসা গ্রামে গিয়ে মিলেছে। রাস্তাটি এর আগে ইট দিয়ে নির্মাণ করা ছিল। এখন সেই রাস্তার পিচ করার কাজ করছে ‘চালনা পৌরসভা’।

পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়ন (আইইউআইডিপি) প্রকল্পের’ আওতায় সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ সড়কের নির্মাণকাজ আরম্ভ হয়, আর চলবে ২০২০ সালের ৯ জুন পর্যন্ত। ১৫ মাসের মধ্যে কাজগুলো শেষ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় আল-আমিন ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চালনা বৌমার গাছতলা কৃষ্ণ চৌকিদারের বাড়ি থেকে খিষ্টান পাড়া পর্যন্ত এ রাস্তা নির্মাণের জন্য ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রাস্তার ৪শ‘ ২০ মিটার পিচ করার চুক্তিতে এই নির্মাণকাজ পায় ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ঢেড় মাস হলো রাস্তায় কাজ শুরু করেছেন ঠিকাদার নূর মুহাম্মাদ। খোয়া বিছানোর কাজ চলছে। এদিকে রাস্তায় নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগে এলাকাবাসী সংস্কারকাজ বন্ধ করে দেন। ঠিকাদারের ব্যবহৃত নিম্নমানের ইট রাস্তা থেকে তুলে ফেলে দেন। সেই সঙ্গে ঠিকাদারকে বলেন, ভালো ইট দিয়ে কাজ করতে।

খলিসা গ্রামের বাসিন্দা ঠাকুর বাওয়ালী জানান, রাস্তা নির্মাণের জন্য যে মানের ইট দেওয়ার কথা ঠিকাদার তা দিচ্ছেন না। ফলে রাস্তাটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

ওই রাস্তার পাশের বাসিন্দা প্রবীর বিশ্বাস বলেন, সড়ক নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কাজ বন্ধ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, স্থানীয় নিম্নমানের বালু নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হয়েছে। বালু দেওয়ার আগে রাস্তার পাশে মাটি না দেয়ায় ধ্বসের শঙ্কা ছিল।

সড়ক নির্মাণকাজের ঠিকাদার নূর মুহাম্মাদ শেখ জানান, ওই রাস্তায় আগে ইট বিছানো ছিল। ওই ইট উঠিয়ে সেগুলো ভেঙে খোয়া তৈরি করে সেই খোয়া রাস্তায় ব্যবহার করার কথা। সেভাবেই করা হচ্ছে। পুরোনো ইটের মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ টাকা। তিনি আরও বলেন, কিছু নতুন ইট প্রয়োজন হওয়ায় স্থানীয় একটি ভাটা থেকে ইট এনেছেন। তার মধ্যে ভাটা কর্তৃপক্ষ কিছু খারাপ ইট দেওয়ায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী প্রনব মল্লিক বলেন, নির্মাণকাজ ভাল করতে হলে কিছু খারাপ খোয়ার প্রয়োজন হয়। রাস্তাটি যাতে ভালোভাবে নির্মাণ করা যায় সে ব্যাপারে ঠিকাদারকে বলে দেওয়া হয়েছে।

চালনা পৌরসভা মেয়র সনত কুমার বিশ্বাস খুলনাটাইমসকে জানান, রাস্তাটি পরিদর্শন করে যদি দেখি নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহৃত হয়েছে, তাহলে নিম্নমানের খোয়া তুলে ফেলে দেয়া হবে। এ ছাড়া ওই রাস্তার নির্মাণকাজ যাতে সঠিক হয়, সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন মেয়র।