কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে ঘের দখলের অভিযোগ

0
803

নিজস্ব প্রতিবেদক:
কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি শরিফুল ইসলাম টিংকু ও সাধারণ সম্পাদক শেখ হাদিউজ্জামান রাসেলের বিরুদ্ধে ঘের দখল, এমপিওভুক্তির নামে একটি স্কুল থেকে বিপুল অংকের অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও চাঁদাবাজি, মারপিট ও নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন উপজেলার সাবেক সভাপতি মোঃ মেহেদী হাসান। বৃহস্পতিবার খুলনা প্রেসকাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ দাবি করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, গত রোববার টিংকু ও রাসেল ৫০/৬০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তার ঘেরে হামলা চালিয়ে ঘেরটি দখল করে নেয়। এসময় ঘেরের ম্যানেজার
শহিদুল্লাহ ও কর্মচারি কামরুল, জহিনুরকে মারপিট করে বের করে দেয়। এ ঘটনার পরে রাসেলের সাথে উপজেলা সদরে মেহেদীর দেখা হলে- বুয়েটের আবরারের মত পিটিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি ছাত্রদলের বি-টিম। ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ কাজলের শ্যালক টিংকু। সে বাংলাদেশ কংগ্রেস নামে একটি ছাত্র সংগঠনের নেতা ছিল। যার পোষ্টার এখনও বিভিন্ন জায়গায় শোভা পাচ্ছে। টিংকু সভাপতি হওয়ার পর এ পর্যন্ত মার্ডারসহ অন্ততঃ ১০টি মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছে প্রায় ৩০ জন। টিংকুর দুলা ভাইয়ের নির্বাচনী ইউনিয়ন উত্তর বেদকাশীতেই ৫ বার মারামারি হয়েছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের মারপিট করে এলাকা ছাড়া করেছে কাজল বাহিনী। উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ছাত্রলীগ সভাপতি আশিকুজ্জামান রাহাত, যুগ্ম-সম্মাদক শাহিন, ইমরান ও যুবলীগ নেতা হাফিজুল ইসলামকে কাজল ও তার লোকজন মারপিট করে। সাবেক সভাপতি মহেদী প্রধামন্ত্রীসহ ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দের কাছে এমন হাইব্রীডদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান।
এদিকে টিংকুর বাড়ির পাশে কয়রা শাকবাড়িয়া কলেজিয়েট স্কুলে এমপিভুক্তির কথা বলে টিংকু বিভিন্ন শিক্ষকের কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমপিও’র তালিকা প্রকাশের পর ওই সকল শিক্ষকরা বর্তমানে হা হুতোশ করছে। তারা টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে বিভন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার আপন চাচা হওয়ায় কোন শিক্ষক আর প্রকাশ্যে মুখ খুলতে পারছে না। ভুক্তভোগী শিক্ষকদের মধ্যে মোঃ ওলিউল্লাহ নামে এক শিক্ষক লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম টিংকু কয়রা শাকবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে এমপিওভুক্তির জন্য বর্তমান শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধূরী নওফেলকে দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের নিকট থেকে বিপুল অংকের টাকা আদায় করে। এরমধ্যে ৬ লাখ টাকা প্রদানের রশিদের একটি কপিও তিনি সাংবাদিকদের নিকট দিয়েছেন। উপ-মন্ত্রীর সাথে একটি সেলফিও টিংকু এলাকার সকলকে দেখায়। ওই সেলফির কারনে শিক্ষকরা সরল বিশ^াসে টাকা দিয়েছে টিংকুকে।
এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি শরিফুল ইসলাম টিংকু খুলনা টাইমসকে বলেন, আমার একমাত্র বোনাই কাজল ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল। তবে সদ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগ করেন। এছাড়া অভিযোগে উল্লেখ করা মৎস ঘের করার জন্য মালিকের সাথে সম্প্রতি কয়েকজন মিলে আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। সত্যি বলতে একটি মহল বরাবরই উপজেলা ছাত্রলীগ এর বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র আঁটছে। তারই ধারাবাহিকতায় এসব অভিযোগ।